নারায়ণগঞ্জ মেইল: বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আব্দুস সালাম আজাদ উপজেলা নির্বাচন নির্বাচন বিষয় বক্তব্যে রাখতে গিয়ে বলেন, আজকে দেশে উপজেলা নির্বাচন দিয়েছে। আমরা বলতে চাই এই সরকারের অধীনে সমস্ত নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা এই সরকারের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন থেকে শুরু করে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনও প্রত্যাখ্যান করেছি। এই সরকারের অধীনের কোন নির্বাচনকে আমরা বিশ্বাস করিনা। বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে ৭জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে ঠিক একই ভাবে আগামীতে উপজেলা নির্বাচনকেও প্রত্যাখ্যান করবে।
বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি বন্দর উপজেলা বিএনপির আওতাধীন কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা গুলো বলেন। বৃহস্পতিবার ( ২১ মার্চ ) বাদ আছর বন্দর উপজেলাধীন সাবদী গ্ৰীন গ্ৰার্ডেন পার্কে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, এই প্রত্যাখানের মাধ্যমে বাংলাদেশ মানুষ জানিয়ে দিবে যে তারা শেখ হাসিনার এই অবৈধ সরকারের নির্বাচনকে বিশ্বাস করে না। আজকে যে একটি ইফতার মাহফিলে এত মানুষ সমবেত হয়েছে এটি আওয়ামী লীগের সরকারের জন্য ভয়। এটি এমন একটি ভয়ের ব্যাপার যে যেখানেই বিএনপি সেখানে হাজার হাজার জনগণের উপস্থিতি। গত ২৮ শে অক্টোবরে ঢাকার যে সমাবেশ হয়েছিল সেখানে স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতি ঘটেছিল। পুরো ঢাকার শহরে ছয়লাব করেছিল। যেভাবে হাসিনা সরকার গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে সেদিন সেখানে প্রতিবাদ করা হয়েছিল। আর আমাদের সেই শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নির্মূল গুলি ও হামলার মাধ্যমে আমাদের সমাবেশকে বানচাল করা হয়েছিল। তারপরও কিন্তু এদেশের মানুষ এই সরকারের সাথে আপোষ করে নাই। এদেশের গণতান্ত্রিক মানুষ আজকে তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছে। এ ঐক্যবদ্ধের মাধ্যমেই আমরা এই স্বৈরাচারী সরকারকে পতন করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো এবং আমাদের নেতা তারেক রহমানকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আনব ইনশাল্লাহ।
আব্দুস সালাম বলেন, এ সরকার এতটাই অত্যাচারী ও নির্যাতিত দেয় বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়েছে প্রথমে পাঁচ বছর পরে দশ বছরের সাজা দিয়ে তাকে মৃত্যুর মুখোমুখি করা হয়েছে। একদিকে দেশ-বিদেশি চক্রান্তকারীরা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে হত্যা করেছে এদেশের সার্বভৌমত্বকে ধ্বংস করার জন্য। যার নেতৃত্বে এদেশের স্বাধীনতা পেয়েছিল। তারই সহধর্মিণী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তারই অবর্তমানে দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য রাজপথে নেমেছিল। সে সময় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছিল এদেশের গণতন্ত্রকে মুক্ত করা না পর্যন্ত আমি রাজপথ ছাড়বো না। তিনি তার কথা রেখেছিলেন দীর্ঘ ৯ বছর স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে এদেশের গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করেছিল। সেই গণতন্ত্রের প্রতি আজকে আঘাত।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের নির্বাসনে নেওয়া হয়েছে। গণতন্ত্রের সংবিধান অধিকারকেও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আপনারা দেখেছেন গত ১৪ সালে একটি প্রহসনের নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিলেন ঠিক একইভাবে ১৮ সালের নির্বাচনে তারা দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। তারি ধারাবাহিকতায় গত সাতই জানুয়ারিও আবারও একটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছে। আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জননেতা তারেক রহমানসহ এদেশের মানুষকে এই সরকারকে আহবান করেছিলেন তত্ত্বাবধায়ন সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার জন্য। বাংলাদেশের ৬৩টি দল বলেছিল তত্ত্বাবধায় সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার জন্য শুধু তাই না তারা বলেছিল এই নির্বাচন কমিশনার অধীনে কোন নির্বাচন অংশগ্রহণ করবে না। তারপরও আমরা বলেছিলাম যে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন দেওয়া হোক। কিন্তু তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় পায়। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যদি নির্বাচন হয় তাহলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে যেভাবে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তাহলে আওয়ামীলীগ ত্রিশটিও সিট পাবে না। তার জন্যই তারা এদেশের মানুষের জনমতকে উপেক্ষা করে গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সেই নির্বাচনের তারিখ প্রত্যাখ্যান করি। তারেক রহমান শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশ তথা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়েছি এই সরকার অধীনে কোন নির্বাচন আমরা অংশগ্রহণ করবো না। সেই নির্বাচনে ৯৫% মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়নি এবং ভোট দেয়নি তারা এই সরকার নির্বাচনকে বর্জন করেছেন। তারা ৫% ভোটের ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত আবারও ক্ষমতায় এসেছে। এখন তারা বলে তারা নাকি সংখ্যা ঘনিষ্ঠতার মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছে। আমরা তাদের এই নির্বাচনকে নিন্দা ও ধিক্কার জানাই।
তিনি আরও বলেন, আমি বাংলাদেশের এ প্রধানমন্ত্রীকে ধিক্কার জানাই তিনি কথায় কথায় বলে বাংলাদেশের মানুষ নাকি তাকে ভোট দিয়ে নিষ্কুষ ভাবে বিজয়ী করেছেন। সাতই জানুয়ারি কি কোন নির্বাচন হয়েছে, সেদিন কি কেউ ভোট দিতে ভোট দিতে গিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায় নাই কেউ ভোট দেয় নাই একটি অপরাধনীতির মাধ্যমে তারা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে চক্রান্তের মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছে। সেইদিন একটি অবৈধ নির্বাচন হয়েছে, আমরা এই নির্বাচন মানি না। কিন্তু সেদিন বাংলাদেশের মানুষে নির্বাচনকে প্রতিহত করেছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেদিন নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। ঈদের পরে আবারো নতুন করে আন্দোলন কর্মসূচি আসছে । দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য আমরা এই সরকারের সকল দুর্নীতির হাত থেকে রক্ষা করে একটা ন্যায়নীতিবান গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যদিয়ে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করবো।
কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহাদুল্লাহ মুকুলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আব্দুস সালাম আজাদ, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ফতেহ রেজা রিপন, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী নুর উদ্দিন আহম্মেদ, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি গোলাম মোস্তফা সাগর, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ, সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ লিটন, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক এড. এইচ এম আনোয়ার প্রধান, বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি শাহেনশাহ আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক রানা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ডা. মজিবুর রহমান, রাশিদা জামাল, শাহিন আহমেদ, হুমায়ূন কবির, মাকিত মোস্তাকিম শিপলু, বন্দর থানা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ পনেজ, বন্দর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মহি উদ্দিন শিশির, সাংগঠনিক সম্পাদক তাওলাদ হোসেন, বিএনপি নেতা আবুল হোসেন রিপন, ইকবাল হোসেন, সোহেল খান বাবু, ডা. নজরুল ইসলাম, ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদ খন্দকার, সাধারণ সম্পাদক মো. মহসিন, মদনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আল মামুন ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক শাহিন শাহ্ মিঠু, বন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. রাজু আহমেদে, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহিম, বন্দর উপজেলা যুবদল নেতা ওদুদ সাগর,বন্দর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি সাকিব রাইয়্যানসহ বন্দর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।