নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ইউনিট কমিটি গঠন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংগঠনের গঠনতন্ত্র না মেনে নিজেদের খেয়াল খুশি মতো কমিটি গঠন করছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা- এমনটাই অভিযোগ নেতাকর্মীদের। এ নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে তাদের মনে এবং অনিয়মের কমিটি তারা মানবেন না বলেও হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন।
ঘটনার বিবরনে প্রকাশ, গত ২৯ আগষ্ট ঘোষনা করা হয় নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের তিন সদস্যের আহবায়ক কমিটি। মনিরুল ইসলাম সজলকে আহবায়ক, সাগর প্রধানকে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এবং সাহেদ আহমেদকে সদস্য সচিব করে তিন সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। কমিটি ঘোষনার পর মহানগর যুবদলের আওতাধীন বিভিন্ন ইউনিট কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেন তারা। ইতিপূর্বে গঠিত মহানগর যুবদলের ৫ সদস্যের আহবায়ক কমিটি প্রায় দুই বছর কাটিয়ে দিয়েছে কিন্তু একটি ইউনিট কমিটিও গঠন করতে পারেনি। এমনকি নিজেদের কমিটিও পূর্নাঙ্গ করতে পারেনি। তাই নতুন কমিটির কাছে নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা ছিলো অনেক। দায়িত্ব পেয়ে ইউনিট কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়ায় নেতাকর্মীরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু নিমিষেই তাদের সেই প্রত্যাশার বেলুন ফুটো হয়ে যায়। কারণ মহানগর যুবদলের নেতারা যেভাবে ইউনিট কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন তা সংগঠনের গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী বলে মনে করছেন তারা।
নেতাকর্মীরা জানান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতায় রয়েছে সদর, বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এবং বন্দর উপজেলা কমিটি। মহানগর যুবদল এই চারটি কমিটির অনুমোদন দেবে আর থানা ও উপজেলা কমিটি ২৭টি ওয়ার্ড ও ৭টি ইউনিয়ন কমিটির অনুমোদন দেবে। এাঁই হচ্ছে সংগঠনের গঠনতন্ত্রেও নিয়ম। কিন্তু মহানগর যুবদল এই নিয়মের তোয়াক্কা করছে না। তারা থানা ও উপজেলা কমিটি না দিওয়ে আগেই ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে যা নেতাকর্মীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।
তৃণমূলের মতে, মহানগর কমিটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি স্বাক্ষর করার অধিকার রাখে না। ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটির অনুমোদনের কাগজে স্বাক্ষর করবেন থানা এবং উপজেলা কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। তাই আগে থানা ও উপজেলা কমিটি গঠন করতে হবে। কিন্তু এই নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেদের খেয়াল খুশি মতো কমিটি গঠনের চেষ্টা করছে। তৃণমূল নেতাকর্মীরা তাদের এই অপচেষ্টাকে ঘৃনাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।
নেতাকর্মীরা ক্ষোভের সঙ্গে জানান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের কমিটি গত দুই বছর যাবত ৫ জনের কমিটিতে সীমাবদ্ধ ছিলো। তারা কোনো ইউনিট কমিটিও দিতে পারেনি। ফলে নেতাকর্মীদের কোনো পদ-পদবী ছিলো না। রাজনৈতিক কোনো পরিচয় ছাড়াই তারা দিনের পর দিন সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়ে যাচ্ছেন। যুবদলের কমিটি না হওয়ায় অনেকেই মূল দল কিংবা বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনে চলে গিয়েছে। কমিটির আশায় যারা এতোদিন যুবদলের সাথে রয়ে গেছেন তারা আশা করেছিলেন মহানগর যুবদলের নতুন কমিটি তৃণমূলের মনের কথা বুঝতে পারবে। কিন্তু তাদের সাম্প্রতিক কর্মকান্ডে আবারো হতাশার সাগরে নিমজ্জিত হতে হচ্ছে তাদের। কারণ মহানগর যুবদল যে প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হচ্ছে তা কোনোভাবেই তৃণমূল বান্ধব নয়। তাই তারা নিয়ম মেনেই কমিটি গঠনের আহবান জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহবায়ক মনিরুল ইসলাম সজল নারায়ণগঞ্জ মেইলকে বলেন, চলমান আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নেয়ার পাশাপাশি আমরা মহানগর যুবদলের আওতাধীন ৭টি ইউনিয়ন ও ২৭টি ওয়ার্ড কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী এক মাসের মধ্যেই আমরা এই কমিটিগুলো ঘোষনা করতে পারবো বলে আশা রাখি। এরপর আমরা থানা, উপজেলা ও মহানগর কমিটি গঠনের কাজ করবো। ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটির অনুমোদন দেবে মহানগর কমিটি।
থানা ও উপজেলা কমিটি গঠন না করে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে সজল বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা আগে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি গঠনের কাজ করছি।