নারায়ণগঞ্জ মেইল: ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নারায়ণগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত হন যুবদল নেতা শাওন। শাওন নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদল নেতা সাদেকুর রহমান সাদেকের কর্মী ছিলেন এবং ঐদিনের মিছিলেও সাদেকের সঙ্গেই এসেছিলেন। শাওন নিহত হওয়ার পরে বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসেছিলেন শাওনের বাড়িতে তার পরিবারকে সান্তনা দিতে। এরপর থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায় থেকে অনেক নেতা সেখানে গেছেন এবং নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। একটা সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপিতে কথা বলেন নিহত শাওনের পরিবারের সাথে। তাদেরকে তারেক রহমান বলেন, আপনাদের জন্যে আমি কি কিরতে পারি। এর উত্তরে শাওনের পরিবার থেকে তারেক রহমানকে বলা হয় আমাদের ছেলে শাওন মারা যাওয়ার পরে সাদেকুর রহমান সাদেক আমাদের অভিভাবক হয়ে সব সময় খোঁজ খবর রেখেছেন, আমাদের জন্যে অনেক কিছু করেছেন। তাই আমরা তার কাছে কৃতজ্ঞ। আমাদের জন্যে আপনি কিছু করতে চাইলে সাদেককে যুবদলের সভাপতি করে দিন। তারেক রহমান তাদের কথা রেখেছেন এবং সাদেকুর রহমান সাদেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক বানিয়েছেন।
এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা বেড়িয়ে এসেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবদলের কমিটি ঘোষনার পরে যা তুমুল আলোড়ন ফেলেছে স্থানীয় রাজনীতিতে। নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত নেতাকর্মীদের মুখে মুখে ফিরছে এখন এই কাহিনী। সেইসাথে কমিটিতে পদ পেতে দলের চেয়ারম্যানকে ‘ইমোশনাল ব্লাকমেইল’ করার অভিযোগও উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
ঘটনা অনুসন্ধানে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবদলের কমিটি হয়না দীর্ঘদিন। কমিটিতে শীর্ষ দুটি পদে আসার জন্যে প্রায় এক ডজন নেতা নানাভাবে চেষ্টা তদবির চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তাদের মাঝে ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবদলের নির্বাহী কমিটির সদস্য সাদেকুর রহমান সাদেকও। সাদেক নারায়ণগঞ্জে মূলত আড়াইহাজারের নজরুল ইসলাম আজাদের অনুসারি। সাদেককে যুবদলে পদায়িত করতে আজাদ লবিং চালিয়ে যাচ্ছিলেন দীর্ঘদিন যাবত কিন্তু এতোসব যোগ্য নেতাদের ভিড়ে সাদেককে নিয়ে সুবিধা করতে পারছিলেন না। তখন তারা সোজা রাস্তা ছেড়ে বাঁকা পথে হাটেন এবং পুলিশের গুলিতে নিহত যুবদল নেতা শাওন প্রধানের পরিবারকে প্রভাবিত করে তারেক রহমানের কাছে সেই বক্তব্য দিতে বাধ্য করেন। আর এভাবেই যুবদল নেতা শাওনের রক্তের দামে যুবদলের আহবায়ক পদ কিনে নেন আজাদ বাহিনী।