নারায়ণগঞ্জ মেইল: বয়স ষাটের উপরে, তার বয়সী সবাই দীর্ঘদিন যাবৎ মূল দলের রাজনীতি করছেন কিন্তু তিনি এখনো যুবদলের নেতৃত্বে থাকার জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি মহানগর যুবদলের আহবায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তু। ষাটোর্ধ্ব মন্তু কেনই বা যুবদলে থাকার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সেই প্রশ্ন এখন তৃণমূল নেতাকর্মীদের মুখে মুখে। তৃণমূল জানতে চায় কি মধু যুবদলে!
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পার হলেও মহানগর যুবদল পাঁচ জনের কমিটিতেই আটকে আছে। এই লম্বা সময়ে তারা না পেরেছে নিজেদের কমিটির পরিধি বৃদ্ধি করতে, না পেরেছে অধীনস্ত ইউনিট কমিটিগুলো সাজাতে। এ কারণে দলের জন্য শ্রম দেওয়া মাঠ পর্যায়ের নেতা কর্মীরা শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন। বছরের পর বছর দলের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেও একটা পরিচয় এখনো মিলেনি তাদের। আর এসব কিছুর মূলে অপরাধীর কাঠগড়া দাঁড় করাচ্ছেন সংগঠনের আহবায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তুকে। মন্তুর স্বেচ্ছাচারী আচরণ আর পদ আঁকড়ে বসে থাকার মানসিকতা সেই সাথে কমিটি বাণিজ্য মিলেমিশে একাকার হয়ে যুবদলের কমিটি এখন ডিপ ফ্রিজে অবস্থান করছে বলে মনে করছে তৃণমূল। তাই অবিলম্বে মন্তুকে যুবদল থেকে সরিয়ে দলকে নতুন ভাবে ঢেলে সাজানোর দাবি তাদের।
সূত্রে প্রকাশ, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরবের ঘনিষ্টজন ছিলেন মমতাজউদ্দিন মন্তু। আর এ পরিচয়ের সূত্র ধরে বুড়ো বয়সেও যুবদলের আহবয়কের পদ বাগিয়ে নেন মন্তু। কিন্তু অতি সম্প্রতি যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির পদ হারান নিরব। ফলে যুবদলের মন্তুর আয়ুও শেষ পর্যায়ে চলে আসে। বিষয়টি বুঝতে পেরে যুবদলের কমিটি পূর্নাঙ্গ করা ও তিনটি থানা কমিটি গঠনের কথা বলে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে পদের জন্যে টাকা দাবি করছেন মন্তু। দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির এ সকল নেতাকর্মীরা মন্তুর এই কমিটি বানিজ্যে হতাশা পোষন করেছে। তাছাড়া মন্তুর দাবি করা টাকা দিতে না পারলে কমিটিতে পদ পাওয়া যাবেনা ভেবে আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রাম থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন যুবদল নেতা জানান, মন্তু কোনো চাকরি বাকরি ব্যবসা-বাণিজ্য করেন না। রাজনীতি থেকেই তার যা আয় হয় সেই টাকায় তার সংসার চলে। এদিকে মন্তুর যুবদলে থাকার সময়ও শেষ হয়ে আসছে। তাই তিনি যাওয়ার আগে নিজের আখের গুছিয়ে নিতে শুরু দিয়েছেন। যুবদলের সাধারণ নেতাকর্মীরা মন্তুর এহেন আচরণে ক্ষুব্দ ও হতাশ। দীর্ঘদিন যাবত সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম করে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এমনিতেই নি:স্ব। তারা কমিটিতে পদ পেতে টাকা দিবো কোত্থেকে। তাই মন্তুর এই কমিটি বানিজ্য বন্ধে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মন্তুর এই পদ বানিজ্যে বিব্রত মহানগর যুবদলের বাকি চার সদস্যও। কিন্তু লোক লজ্জার ভয়ে তারা কিছু বলতেও পারছেন না। মন্তুর এই অমানবিক আচরনের জন্যে তৃণমূলের কাছে জবাবদিহি করতে হচ্ছে তাদের। কিন্তু এসব কোনো কিছুরই পরোয়া করছেন না মন্তু। টাকার নেশায় অন্ধ হয়ে গেছেন তিনি।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে মমতাজ উদ্দিন মন্তর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।