পদ হারাচ্ছেন দুই সভাপতি!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: টানা তৃতীয়বারের মত আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার পরও নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক অবস্থার বেহাল দশা হয়ে পড়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগ সরকার আমলে ব্যাপক উন্নয়ণ হলেও সাংগঠনিক ভাবে পিছিয়ে রয়েছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের নজরে আসলে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের নেতাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে নতুন কমিটি দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া কালেই সাড়া দেশে করোনা ভাইরাসের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে। আর করোনা ভাইরাসের প্রভাবের কারণে জেলা ও মহানর আওয়ামীলীগের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া থেকে যায়। তবে বর্তমানে করোনা ভাইরাসের প্রভাব কমে যাওয়ায় ফের জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের নতুন কমিটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। আর নতুন কমিটি গঠনের আগে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটি দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর আহবায়ক কমিটি দেয়া হলে নতুন কমিটি গঠনের আগেই পদ হারাবেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন।

জানা গেছে, মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটির মেয়ার উর্ত্তীণ হয়েছে কয়েক বছর আগেই। কমিটির মেয়ার শেষ হলেও এখনো পর্যন্ত মহানগরীর ২৭ ওয়ার্ডে নতুন কমিটি গঠন করতে পারেনি। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলী ও সহযোগী সকল সংগঠনের মধ্যে শুধুমাত্র মহানগর আওয়ামীলীগের সুবিধাবাদি ও রাজনীতিতে নিস্ক্রীয় নেতাদের সংখ্যা বেশি। মহানগর আওয়ামীলীগের অনেক নেতা দলের পদ-পদবী ব্যবহার করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। অপরদিকে, আর কয়েক মাস পরই জেলা আওয়ামীলীগের কমিটির মেয়াদ উর্ত্তীণ হতে যাচ্ছে। বহু প্রত্যাশার পর জেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হলেও গত তিন বছরে রাজনীতিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীরে কমিটি। এরই মধ্যে নিস্ক্রীয় হয়ে পড়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। এছাড়াও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বলয়ের পক্ষে কাজ করে আলোচিত সমালোচিত হয়েছেন।

সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে সাংগঠনিক ভাবে নেমে এসেছে স্থবিরতা। দীর্ঘদিন পদে থেকে নেতাদের মধ্যে চলে এসেছে ক্ষমতাসর অহমিকা আর কর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে নেতারা নিজেদের পকেট ভারী হলেও কর্মীদের দুর্দিন অতিবাহিত হচ্ছে। এর ফলে নেতাদের সাথে কর্মীদের দূরত্ব ক্রমশই বেড়ে চলছে। দলীয় কর্মসূচিতেও কর্মীদের অংশ গ্রহন কমে গেছে। যদিও করোনা ভাইরাসের প্রভাবের কারণে রাজনৈতক কর্মসূচী নেই বললেই চলে। তবে করোনা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা সাধারণ মানুষে পাশে থেকে তাদের কল্যানে কাজ করার ঘোষনা দিলেও জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা ছিলেন গৃহবন্দি।

কর্মীদের দাবি, দলের নাম ব্যবহার কর দলের পদধারী নেতারা নানা ভাবে লাভবান হলেও কর্মীরা বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। এছাড়া নেতাদের মধ্যে পদের দীর্ঘসূতিকার কারণে অনেকটা অহমিকা কাজ করছে। ফলে নেতাদেও সাথে কর্মীদেরও দূরত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে কর্মীদের মূল্যায়ন কমে গেছে। রাজনৈতিক বোদ্ধা মহলের মতে, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতি অল্প কিছু নেতার কাছে জিম্মী হয়ে পরেছে। তাদের একঘেয়ামীর কারণেই নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নতুন নেতৃত্ব উঠে আসছে না। কর্মীদের অভিযোগ, পদধারী নেতাদের কারণেই নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের এ অবস্থা হয়েছে। পদে থাকা নেতারা নিজেদের স্বার্থে নতুন করে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সেগুলো কমিটি দেয়া হয়েছে তা নিয়ে রয়েছে নানা বিতর্কি। পদধারী নেতাদের পদ চলে গেলে দলের ভেতরে তাদের অধিপত্য ক্ষুন্ন হবে এ কারণে নতুন করে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে তারা পর্দার আড়ালে বসে কলকাঠি নাড়ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ