নারায়ণগঞ্জ মেইল: শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ প্রশাসনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ( ১৫ সেপ্টেম্বর ) দুপুর বারোটায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফার রাসেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান।
এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমানকে শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছা জানান এবং দুর্গোৎসবে অংশ নিতে নারায়ণগঞ্জে আমন্ত্রণ জানান।
নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি ও এফবিসিসিআই’র পরিচালক প্রবীর কুমার সাহা বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষ উৎসব প্রিয় এখানে সকল ধর্ম বর্ণের মানুষ সমানভাবে উৎসব পার্বণ পালন করে থাকে। গত দুই বছর করোনা মহামারীর কারণে স্বল্পপরিসরে দুর্গোৎসব পালন করা হয়েছে। এবার মহামারীর না থাকায় নারায়ণগঞ্জের মানুষ উৎসবে অংশ নিতে মুখিয়ে আছে। আমরা সকলকে সাথে নিয়ে একটি সুন্দর এবং উৎসবমুখর দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।
মতবিনিময় সভায় শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়ে সকল বিট এলাকা থেকে আগত পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ ও উপস্থিত সকলের মতামত গ্রহণ করে পুলিশ সুপার ।
সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, নিজ নিজ ধর্ম সুষ্ঠুভাবে পালনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় জেলা পুলিশ সব সময় সর্তক রয়েছে। জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলার সব সার্কেল ও থানার অফিসার ইনচার্জদের পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্তক থাকার নির্দেশ দেন।
জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিটি পূজা মণ্ডপ এলাকায় সর্বোচ্চ আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা রাখার আহ্বান জানান। সেইসাথে যানজট নিয়ন্ত্রণে শহরে বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট ও একমুখী যানচলাচল নিশ্চিত করা হবে বলে অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন।
নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পূজা মন্ডপের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে লিখিত আকারে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর প্রেরণ করে নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন বলেন, “ধর্ম যার যার উৎসব সবার” এই স্লোগানকে সামনে রেখে প্রতিবারের মতো এবারও নারায়ণগঞ্জবাসী জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করবে। ইতিমধ্যে আমরা সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করছি। আমরা ইতিপূর্বে জেলা পর্যায়ে সকল পূজা মন্ডপ গুলোর প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেছি। নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের সাথে মতবিনিময় করেছি। আজকে পুলিশ প্রশাসনের সাথে মতবিনিময় করছি। সকলের সাথে সমন্বয় করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা আয়োজনে আমরা বদ্ধ পরিকর। নারায়ণগঞ্জের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। এখানে সকল ধর্মের সকল মতের মানুষ মিলেমিশে আনন্দ উৎসব ভাগাভাগি করে নেয়। নারায়ণগঞ্জের জনপ্রতিনিধি গণ তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করে থাকেন। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমান এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ একেএম সেলিম ওসমান সর্বদাই আমাদের পাশে থেকেছেন। গত বছর কুমিল্লায় যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছিলো, সে সময়ে নারায়ণগঞ্জের মাননীয় সংসদ সদস্যগণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে নারায়ণগঞ্জে কোনরকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দেননি। এবারও আমরা নারায়ণগঞ্জের সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষকে সাথে নিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করতে চাই। আমাদের ভরসা নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষ। সকলের সম্মিলিত সহযোগিতায় আমরা শারদ উৎসবে মেতে ওঠার অপেক্ষায় আছি। সকলকে শারদীয় শুভেচ্ছা।
এ সময় জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপনের সাংগঠনিক দক্ষতার প্রশংসা করেন প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং মতবিনিময় সভায় আগত বিভিন্ন পূজা মন্ডপের প্রতিনিধিগণ।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেলের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( প্রশাসন ) জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( অপরাধ ) আমির খসরু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( ডিএসবি ) শফিকুল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এফবিসিসিআই এর সদস্য ও আমলাপাড়া পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা, বাংলাদেশ ইয়াং মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক কুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক প্রদীপ কুমার দাস, সদস্য সচিব রঞ্জিত মন্ডল, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অরুণ কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক উত্তম সাহা, মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিমাই চন্দ্র দে, সোনারগাঁয়ের সভাপতি লোকনাথ দত্ত, সাধারণ সম্পাদক এড. প্রদীপ ভৌমিক, সিদ্ধিরগঞ্জের সভাপতি শিশির ঘোষ অমর, সাধারণ সম্পাদক খোকন বর্মন, বন্দরের সভাপতি শংকর দাস, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস, রূপগঞ্জের সভাপতি গনেশ চন্দ্র পাল, ফতুল্লার সাধারণ সম্পাদক শিবু দাস, পূজা পরিষদ নেতা সুশীল দাস, রামাকান্ত সরকার, তপন গোপ সাধু, কৃষ্ণ আচার্য্য, অভিরাজ সেন সজলসহ পূজা পরিষদের বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।