নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জে নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে পড়েছে কিশোর গ্যাংয়ের দৌড়াত্ম। প্রতিটি পাড়া মহল্লায় কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। কিশোর গ্যাং এখন নারায়ণগঞ্জের মহা সমস্যায় পরিনত হয়েছে। তবে কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রনের ঘোষনা দিয়েছেন নবাগত পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল।
নারায়ণগঞ্জে যোগদানের একদিন পরই সংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার বলেছিলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে শুধু নারায়ণগঞ্জে না, সারা বাংলাদেশে কিশোর অপরাধ সমাজের একটা নৈতিক স্খলনজনিত একটা কিছু হতে যাচ্ছে। ছোট ছোট বাচ্চারা, এদের মধ্যে কেউ শিক্ষিত আছে, কেউ অশিক্ষিত আছে এবং কর্মজীবী ছেলেরাও আছে। এই যে অপরাধ এটা আসলে পুলিশের পক্ষে ১শ’ ভাগ নির্মূল করা আসলে সম্ভব না।
এটা যেমন বাবা-মা’র দায়িত্ব আছে, স্কুল কলেজের টিচারের দায়িত্ব আছে, পুলিশের বড় একটা ভূমিকা এবং দায়িত্ব আছে, আপনাদের দায়িত্ব আছে। সবাই মিলে যদি আমরা একযোগে কাজ করি, তা হলে কিন্তু আমি মনে করি কিশোর গ্যাং নির্মূল করা সম্ভব।
ইতিমধ্যে কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে প্রতি পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাংয়ের তালিকা করছে পুলিশ। পুলিশের প্রতিটি বিট অফিসার এলাকা ভিত্তিক তালিকা করছেন। তালিকা সম্পূর্ণ হলেও কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রনে বিশেষ অভিযান শুরু হবে বলে জানাগেছে।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসীরা। ধারালো অস্ত্র হাতে দল বেঁধে চলা, পথিমধ্যে প্রকাশ্যে কাউকে কুপিয়ে জখম করা তাদের কাছে স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
অভিযোগ রয়েছে, কিশোর গ্যাংয়ের শেল্টার দিচ্ছেন স্থানীয় কতিপয় রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিরা। যারা বিভিন্ন সময়ে নিজেদেও স্বার্থ হাসিল করতে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের ব্যবহার করে থাকেন। আর সেই সকল রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিরা বড় ভাই হিসেবে পরিচিত। বড় ভাইয়ের আশ্রয় প্রশ্রয়ে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা বেপরোয়া হয়ে উঠে।
অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, কিশোর অপরাধ বর্তমানে ভয়ঙ্কর আকারে রূপ নিয়েছে। এখনই কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না হলে আগামীতে নারায়ণগঞ্জ শহরে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বেড়ে যাবে। তাই কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আগে তাদের শেল্টারদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।