নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপিতে মাইনাস ফর্মূলা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছে তৃণমূল। দলের নেতায় নেতায় বিরোধের সূত্র ধরে কোনো এক নেতার সকল অনুসারীদের কমিটি থেকে বাদ রাখার সিষ্টেমের কারনে এই বিশৃঙ্খলার সূত্রপাত। ফলে নতুন কমিটি গঠন করে দল শক্তিশালী হওয়ার পরিবর্তে বিরোধের মাত্রা আরো বেড়ে গিয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হচ্ছে। আর তাই কাউকে মাইনাস না করে সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের দাবি তৃণমূলের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির অন্তর্গত ১০টি ইউনিট কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে এ্ই মাইনাস ফর্মূলা কার্যকর করা শুরু হয়েছে। যা পরবর্তীতে প্রকট আকার ধারন করেছে। কথিত আছে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবিকে পুুলিশে ধরিয়ে দিয়ে সদস্য সচিব মামুুন মাহমুদ বিরাট কমিটি বানিজ্যের মাধ্যমে ১০টি ইউনিট কমিটি ঘোষনা করেন। এ কাজে তাকে সহায়তা করেন জেলা বিএনপির আরেক বিতর্কিত নেতা রূপগঞ্জের নাসিরউদ্দিন। নাসির-মামুনের কৃতকর্মের ফল এখন দলের সবাইকে ভোগ করতে হচ্ছে।
সূত্র মতে, নারায়ণগঞ্জ বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটি থেকে সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন অনুসারীদের মাইনাসের নাটক সাজাতে চেয়েছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। গিয়াসউদ্দিন শিবিরের নেতাকর্র্মীদের বাদ দিয়েই থানা কমিটির সম্মেলন আয়েজনও করে ফেলেন অধ্যাপক মামুুন। কিন্তু মামুন মাহমুুদের সেই দুরভিসন্ধি সফল হতে দেয়নি গিয়াসউদ্দিন সমর্থকরা। শুক্রবার ১৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সেই সম্মেলনকে বানচাল করে দেন তারা এবং সবাইকে নিয়ে কমিটি গঠনের দাবি জানান। স্থানীয় নেতাকর্মীরা চান সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির কমিটিতে বিতর্কিত কাউকে উড়ে এসে জুড়ে বসতে দেয়া হবে না।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে তিনটি ইউনিট কমিটি ঘোষনা করে জেলা বিএনপি। একটি উপজেলা ও দুটি পৌরসভা কমিটির পুরোটাই দেয়া হয় বিতর্কিত বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম আজাদের লোকজনকে। অথচ আড়াইহাজার বিএনপির সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা প্রয়াত বদিউজ্জামান খসরুর অনুসারীদের কাউকেই রাখা হয়নি কমিটিতে। প্রয়াত খসরুর ছেলে উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন পিতার দেখানো পথে নেতাকর্মীদের নিয়ে দু:সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপূূর্ণ ভূমিকা রাখলেও কমিটি গঠনের সময়ে তাকে পুরোপুরি মাইনাস করে দেয়া হয়। আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি করা হয় ইউসুফ মেম্বারকে যিনি গত ১৫ বছর আড়াইহাজারে ছিলেনই না, তিনি থাকতেন ঢাকার সাভারে। আন্দোলন সংগ্রামে তাকে কোনোদিন রাজপথে দেখা না গেলেও উপজেলা কমিটির সভাপতি পদ ঠিকই বাগিয়ে নেন নজরুল ইসলাম আজাদের কল্যাণে। সেইসাথে আড়াইহাজার উপজেলা যুবদলের ব্যর্থ নেতা জুয়েল আহমেদকে দেয়া হয়েছে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব। আর এসবই করা হয়েছে মাহমুদুর রহমান সুমন অনুসারীদের মাইনাস করার জন্যে।
একই অবস্থা সোনারগাঁ উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটিতেও। এখানেও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নানের পকেটে কমিটি দিতে গিয়ে মাইনাস করে দেয়া হয়েছে এক সময়ে সোনারগাঁ বিএনপির অভিভাবক সাবেক মন্ত্রী রেজাউল করিম ও সাবেক উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফর ও তাদের অনুসারীদের। মাইনাসের চেষ্টা করা হচ্ছে সোনারগাঁ বিএনপির হাল আমলের ক্রেজ উদীয়মান নেতা সহিদুর রহমান স্বপনের অনুসারীদের। আজহারুল ইসলাম মান্নান সোনারগাঁ বিএনপিতে একক কতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্যে সকল মতের নেতাকর্মীদের মাইনাসের ফর্মূলা বাস্তবায়ন করে চলেছেন।