নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি থাকাকালে সংগঠনের সকল চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে ফেলেছিলেন এড. তৈমূর আলম খন্দকার। যখন যার কাছ থেকে সুবিধা পেতেন তাকেই পদ পদবী দিয়ে দিতেন আবার কারো কাছ থেকে কাঙ্খিত কিছু না পেলে তার কাছ থেকে কেড়েও নিয়েছেন তিনি। সংগঠন কিংবা গঠনতন্ত্রের কোন তোয়াক্কাই তিনি করতেন না । নিজের ইচ্ছে মতো দল চালাতেন এই সুবিধাবাদী নেতা। সে থেকে জেলা বিএনপির নেতৃত্বে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে, সে ক্ষত এখানো বয়ে বেড়াতে হচ্ছে নেতাকর্মীদের। আর তাই দলের সাংগঠনিক কাঠামো ধ্বংসের মহানায়ক তৈমূরকে আবারো জেলা বিএনপির দৃশ্যপটে দেখে শংকিত হয়ে পরেছেন তারা।
জানা যায়, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামানের ব্যর্থতা ও অপারগতায় জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারী। আর সে ক্ষেত্রে নতুন সভাপতি হিসেবে পুনরায় দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন এড. তৈমূর আলম খন্দকার। তৈমূরকে জেলা বিএনপির সভাপতি করতে কেন্দ্রে জোর লবিং গ্রুপিং চালিয়ে যাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির ধনাঢ্য নেতা আজহারুল ইসলাম মান্নান। বলা যায় তৈমূরের ঘাড়ে বন্দুক রেখে শিকার করতে মরিয়া নব্য ধনী মান্নান।
সূত্র জানায়, এড. তৈমূর আলম খন্দকার বেশ কয়েক বছর যাবত নারায়ণগঞ্জ জেলার রাজনীতি ছেড়ে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। বিএনপি চেয়ারপার্সণ বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য তিনি। তাছাড়া পেশায় আইনজীবী তৈমূর ওকালতিও করেন ঢাকায়। মাঝে মধ্যে আসেন নারায়ণগঞ্জে। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন তৈমূর। তাছাড়া জেলা বিএনপির সভাপতি থাকাকালীন নানা অনিয়মের কারনে নেতাকর্মীরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন তৈমূরের দিক থেকে। সেই অনিয়ম আর স্বেচ্ছাচারিতার কারিগর তৈমূরকে আবারো জেলা বিএনপির রাজনীতিতে ফেরাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছেন সোনারগাঁয়ের মান্নান।
এদিকে তৈমূরের জেলা বিএনপির সভাপতি হওয়ার খবরে নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া। কারন সাবেক সভাপতি থাকাকালে ত্যাগী নেতাকর্মীদের প্রতি তৈমূরের অবহেলা আর অবমূল্যায়নের কথা তারা এখনো ভুলে যাননি। তাছাড়া তৈমূর জেলার সভাপতি হওয়া মানে আবারো ‘হাদিয়ার বাক্স’ খুলে যাওয়া এবং বিভিন্ন পদ পদবী তখন হাদিয়ার পরিমানের উপর নির্ভর করবে বলে অভিমত পুরানো নেতাকর্মীদের। ইতিপূর্বেও তৈমূর একই পদ একাধীকজনকে দিয়েছেন হাদিয়ার বিনিময়ে, আবার অনেককে করেছেন পদচ্যুত। তাই ফের তৈমূর জেলা সভাপতি হওয়ার খবরে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
নানা অনিয়মের রূপকার তৈমূর আলম খন্দকারও মান্নানের সবুজ সংকেত পেয়ে নতুন করে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে মাথাচাড়া দিয়ে ঊঠার চেষ্টা করছেন। এ লক্ষ্যে রবিবার ২৩ আগষ্ট তার নিজ বাসভবনে কিছু নাম সর্বস্ব নেতাকর্মী নিয়ে মিটিংও করেছেন। যদিও এতে করে দলের নিবেদিত প্রাণ নেতাকর্মীরা খুশি হতে পারেননি। কারন ন্যাড়া দ্বিতীয়বার কখনো বেলতলায় যেতে রাজি হয় না। তেমনিভাবে যারা এক সময়ে তৈমূরের অধঅনে রাজনীতি করেছেন তারা কখনো আর সেই দুর্বসহ স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে চাননা। আর তাই তৈমূরকে দৃশ্যপটে দেখে অজানা শংকা ভর করছে তাদের মনে।