নারায়ণগঞ্জ মেইল: অসছে পবিত্র মাহে রমজান। রমজানের আগেই নারায়য়ণগঞ্জের বাজারে নিত্যপণ্যের উচ্চ দামে নাভিশ্বাস উঠেছে ক্রেতাসাধারনের। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে দাম বেড়েছে চাল, চিনি, মুরগি, সবজি ও পেঁয়াজের। এ ছাড়া বৃদ্ধি পাচ্ছে অন্যান্য পণ্যের দাম। শনিবার (১২ মার্চ) নারায়ণগঞ্জের দ্বিগুবাবু বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
বাজারের অস্থিরতা নিয়ে বিক্রেতারা বলছেন, পরিবহনের খরচ বেড়ে যাওয়ায় রোজার আগেই বাজারে অস্থিরতা চলছে। যা রোজা শুরু হলে আরও বাড়তে পারে। প্রতি সপ্তাহে কোনো না কোনো পণ্যের দাম বেড়েই চলছে।
অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, বাজারে তারা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারছেন না। সবজির বাজারে কিছুটা স্থিতিশীলতা আশা করলেও অন্যসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মতো সবজির বাজারের অস্থিরতাও তাদের নাভিশ্বাস বাড়িয়ে তুলছে। বিশেষ করে রমজানকে সামনে রেখে একটি অসাধু চক্র প্রতিবারের মতো এবারেও ছোলা, ডাল, তেলসহ রমজানের নিত্য ব্যবহার্য পণ্যের দাম বাড়াতে শুরু করে দিয়েছে। অভি দ্রুত প্রশাসনের কঠোর মনিটরিং জোরদার করা দরকার। তানাহলে রমজানে ভোগান্তি মাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
সর্বশেষ খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, বিচিযুক্ত শিম গত সপ্তাহে ৫০ টাকা বিক্রি হলেও চলতি সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে, বিচি ছাড়া শিম ৪০-৪৫ টাকা, কয়েক সপ্তাহে আগে ১৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া আলু এখন ২০ টাকা। রোজার শুরু আগেই কাঁচামরিচ ও ধনিয়াপাতা পৌঁছেছে কেজিপ্রতি ৮০ টাকায়। টমেটো মান অনুযায়ী ৪০-৫০ টাকা কেজি, মান ও আকার অনুযায়ী বেগুন কেজিপ্রতি ৫০-৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, গত সপ্তাহে মাঝারি সাইজের লাউ প্রতিটি ৬০ টাকা করে বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা করে, লেবুর হালি ৪০ টাকার থেকে ৫০ টাকায় পৌঁছেছে। ফুলকপি প্রতিটি ৫০ টাকা, বরবটি মান অনুযায়ী ৮০-১২০ টাকা কেজি, ঝিঙ্গা কেজিপ্রতি ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ১০০ টাকা কেজি, উস্তের কেজি ১২০ টাকা, শসা কেজিপ্রতি ৬০ ও করলা ১৪০ টাকা কেজি করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাঁচকলা হালি প্রতি ৪০, এক মুঠো লাল ও পালংক শাক ১০-১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে বেড়েছে আলুর দাম। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা। এ ছাড়া দাম বেড়েছে পেঁয়াজের। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি।
বাজারে চায়না রসুন প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি। দেশি আদার কেজি ৬০ টাকা। চায়না আদার দাম কমে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।
আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ডাল। ইন্ডিয়ান ডালের কেজি ১০০ টাকা। গত সপ্তাহে ইন্ডিয়ান ডাল প্রতিকেজি বিক্রি হয় ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। দেশি ডালের কেজি ১২০ টাকা।
বাজারে ভোজ্যতেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। এ ছাড়া বাজারে বেড়েছে চিনির দাম। প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৮৬ টাকায়। প্যাকেট চিনি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়।
বাজারে আগের দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম। লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯৫ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকা। সোনালি (কক) মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। বাজারে আগের দামে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৪০ থেকে ৬৫০ টাকায়।
বাজারে বেড়েছে মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়। সোনালি মুরগি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২৮০ টাকা কেজি ধরে। বেড়েছে লেয়ার মুরগির দাম। কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২৩০ টাকা কেজি।
বেড়েছে চালের দাম। কেজিতে বেড়েছে ২ থেকে ৫ টাকা। বাজারে নাজিরশাইল চালে কেজিতে বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা। নাজিরশাইল চালের কেজি ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট চালে প্রতিকেজিতে ১ থেকে ২ টাকা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৬ থেকে ৬৭ টাকা, আটাশ চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা।