হরিহরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জের হরিহরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা লুৎফুন্নেছার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ২০২৩ সালে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে যোগ্য প্রার্থীদের পিছনে ফেলে তিনি স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পান এবং এর পর থেকে স্কুলের সকল কিছুতেই তার একক কতৃত্ব স্থাপনের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ স্কুল সংশ্লিষ্টদের। তাছাড়া স্কুল ফান্ডের টাকা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে প্রধান শিক্ষিকা লুৎফুন্নেছার বিরুদ্ধে। অতি সম্প্রতি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনেও তিনি তার পছন্দের প্রার্থীদের সুবিধা দিতে নানাভাবে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর তাই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন স্থানীয়রা।


স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য আবু হানিফ এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এখন কমিটিতে নাই তবে বিভিন্নভাবে চানতে পারি যে বিগত কমিটি অনেকটাই মেকানিজম করে প্রধান শিক্ষিকা লুৃৎফুন্নেছাকে নিয়োগ দিয়েছে। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রকৃয়ায় অনেক যোগ্য প্রার্থী আবেদন করলেও কমিটি যাচাই বাছাই করে সেসব যোগ্যদের বাতিল করে দেয় এবং উচ্চ মাধ্যমিকে তৃতীয় বিভাগ পাওয়া লুৎফুন্নেছাকে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে।


তিনি অভিযোগ করে বলেন, আগামী ২১ জুলাই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের দিন ধার্য্য করা হয়েছে অথচ সেদিন হলো সোমবারবার অর্থাৎ সাপ্তাহিক কর্মদিবস। এ ধরনের নির্বাচনগুলো সাধারনত সরকারী ছুটির দিনগুলোতে আয়োজন করা হয়ে থাকে যাতে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন কিন্তু এক্ষেত্রে সোমবার হওয়ায় অনেকেরই ভোট দিতে অসুবিধা হয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা এখন কমিটিতে নাই কিন্তু অনেক কথাই কানে আসে। স্কুলের তহবিল নিয়েও অনিয়মের বিভিন্ন কথা শোনা যায়। শোনা কথা সত্যি নাও হতে পারে তাই আমরা এর একটা সুষ্ঠ তদন্ত চাই শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কাছে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন সাবেক অভিভাবক সদস্য বলেন, প্রধান শিক্ষিকা লুৎফুন্নেছার নিয়োগ নিয়েও ঘোর অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তিনি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আ: লতিফের ভাগ্নি পরিচয়ে স্থানীয়দের মোটা টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে এখানে নিয়োগ পেয়েছেন। তার চেয়ে অনেক যোগ্য প্রার্থী থাকার পরেও সবাইকে পেছনে ফেলে তার নিয়োগ পাওয়াটাইতো বড় অনিয়ম। তিনি নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে শিক্ষক নিয়োগসহ স্কুলের বিভিন্ন কাজে তিনি একাই সিদ্ধান্ত নেন। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির প্রশ্রয়েই তিনি গত এক বছর যাবত স্কুলে নিজের আধিপত্য বিস্তার করে গেছেন। স্কুলের তহবিলের টাকা তিনি ব্যক্তিগত ব্যবসায়ের কাজে ব্যবহার করছেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। তাই একটি সুষ্ঠ তদন্ত হলেই সব কিছু বের হয়ে আসবে বলে আমরা মনে করি।


এসব অভিযোগের বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা লুৎফুন্নেছার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সকল বিধি মেনেই আমার নিয়োগ প্রকৃয়া সম্পন্ন হয়েছে। যোগ্যতার ভিত্তিতেই আমি চাকুরী পেয়েছি। স্কুলের ফান্ড ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের প্রশ্নই উঠে না। কারো যদি অভিযোগ থাকে তাহলে প্রমাণ দিতে বলুন। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হলেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার। তিনি নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করেছেন। তাই এ বিষয়ে আমার কিছু করার নেই।


এসব বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকউদ্দিন আহমেদ বলেন, স্কুল কমিটির নির্বাচন ছুটির দিনে হলে ভালো হতো কথাটা ঠিক তবে যেহেতু সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহন চলবে তাই আশা করি অভিভাবকদের ভোট দিতে সমস্যা হবে না।


প্রধান শিক্ষিকার দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ