ডামি প্রার্থীদের হাকডাক!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তৃতীয় নির্বাচন আসন্ন। যদিও চলমান মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। আর এই অনিশ্চয়তার কারণে নির্বাচনে মেয়র পদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বীরা এখনো নিজেদের আলোচনায় আনেননি। তবে কয়েকজনের হাকডাক শোনা যাচ্ছে। যদিও নগরবাসী তাদেরকে ডামি প্রার্থী হিসেবেই বিবেচনা করছেন।

সূত্র প্রকাশ, গত সিটি নির্বাচনে বেশ কয়েকজন ডামি মেয়রপ্রার্থীর দেখা পাওয়া গিয়েছিলো যাদের নিজস্ব কিংবা দলীয় কোনো ভিত্তি না থাকলেও বিভিন্ন সুবিধা প্রাপ্তির আশায় নামসর্বস্ব দলের মনোনয়নে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এদের মধ্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মনোনয়নে সোহেল মোল্লা ও বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) থেকে কামাল প্রধান নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু জনশ্রুতি আছে তৎকালীন বিএনপি প্রার্থীর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে তারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছিলেন। এ কারণে এখনও তারা নগরবাসীর কাছে ডামি প্রার্থী হিসেবে পরিচিত।

গত নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় এবারও বেশ কয়েকজন ডামি প্রার্থীর আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। এদের মধ্যে কামরুল ইসলাম বাবু নামে সম্পূর্ণ অখ্যাত এক ব্যক্তি সংবাদ সম্মেলন করে নিজেকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ইতিমধ্যে তার ছবি সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে ফেলেছেন সিটি এলাকা। যদিও রাজনৈতিক বা সামাজিকভাবে তার কোন অবস্থানে নেই বলে মনে করেন নারায়ণগঞ্জবাসী। আর তাই নগরবাসীর চোখে তিনি একজন ডামি প্রার্থী হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছেন।

কামরুল ইসলাম বাবুর মতো আরেকজন ডামি প্রার্থী আসন্ন সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি হলেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র বিতর্কিত নেতা আবু আল ইউসুফ খান টিপু। যদিও বিএনপির হাইকমান্ড থেকে বলা হয়েছে বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। তারপরও টিপুর নির্বাচন করার ইচ্ছাকে তাই অন্য চোখে দেখছে সচেতন নাগরিক সমাজ। নির্বাচনের মূল প্রার্থীদের কাছ থেকে কোনো সুবিধা আদায়ের জন্য টিপুর এই মতিভ্রম হতে পারে বলে ধারণা তাদের।

প্রসঙ্গত ২০০৩ সালের ১৬ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনের মাত্র ১৭ দিন আগে নিউজিল্যান্ড থেকে উড়ে বাংলাদেশে আসেন নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রয়াত চেয়ারম্যান আলী আহাম্মদ চুনকার মেয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভী। নারায়ণগঞ্জ বাসীর কাছে সম্পূর্ণ অপরিচিত আইভী পিতার ইমেজকে কাজে লাগিয়ে সেবার পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নুরুল ইসলাম সরদারকে হারিয়ে পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাঁর সক্রিয় রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত ঘটে। ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইভী বিপুল ভোটে জয়ী হন। ওই নির্বাচনে দলের সমর্থন না পেলেও একচুল পিছু হটেনি আইভী। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন শামীম ওসমানের মত প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে। সবশেষ ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়া সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে ধানের শীষের প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন আইভী। আসন্ন সিটি নির্বাচনেও তিনি নৌকা প্রতীক চাইবেন বলে ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ