হিরো থেকে জিরো

নারায়ণগঞ্জ মেইল: সময় এবং নদীর স্রোত কারো জন্য থেমে থাকে না, আপন নিয়মে আপন গতিতে সদা বহমান। এই সময়কে কাজে লাগিয়ে কেউ হয়ে যায় নায়ক আবার সময়ের ঘূর্ণিপাকে পড়ে নায়ক থেকে হয়ে যান খলনায়ক। যেমনটা ঘটেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বেলায়। মহামারী করোনা ভাইরাসের সময়টাকে পরিপূর্ণ ভাবে কাজে লাগে রাতারাতি নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে হিরো হয়ে গিয়েছিলেন কাউন্সিলর খোরশেদ। “বীর বাহাদুর” “করোনা বীর” নানা বিশেষণে হয়েছিলেন সম্মানিত। তার জনপ্রিয়তা নারায়ণগঞ্জের গণ্ডি ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল দেশব্যাপী, এমনকি দেশের বাইরেও। অতি উৎসাহী অনেকে তাকে নিয়ে স্বপ্নের জালও বুনতে শুরু করে গিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ভবিষ্যৎ মেয়র ভেবে।

কিন্তু বিধিবাম! যেভাবে রাতারাতি সামান্য এক কাউন্সিলর থেকে নারায়ণগঞ্জের সুপার হিরো হয়ে উঠেছিলেন খোরশেদ, তেমনিভাবে আকস্মিক ঝড় সব কিছু লন্ডভন্ড করে দিয়ে আকাশে উড়তে থাকা খোরশেদকে একটানে মাটিতে নামিয়ে নিয়ে আসে। নারায়ণগঞ্জবাসীর সেই “সুপার হিরো” সময়ের মারপ্যাচে পড়ে হয়ে গেলেন বিরাট এক জিরো।

জানা যায়, কাউন্সিলর খোরশেদের সাম্প্রতিক অবস্থা খুবই নাজুক। সাইদা শিউলী নামক এক নারীর সাথে প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে তার রাজনৈতিক ও সমাজিক অবস্থান আজ হুমকির মুখে। সেই নারীর দায়েরকৃত মামলার আসামী হয়ে এখন তাকে ফেরারী জীবন যাপন করতে হচ্ছে। করোনা যুদ্ধে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়া টিম খোরশেদের প্রধান সেনাপতি আজ নিজেই আশ্রয়ের সন্ধানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সময় আজ কোথা থেকে এনে তাকে কোথায় নিয়ে দাঁড় করিয়েছে।

ঘটনা সূত্রে প্রকাশ, প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় নারায়ণগঞ্জে আলোড়ন তুলেছিলেন ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। করোনার প্রকোপ শুরুর পর থেকেই জনগনকে সচেতন করা, মাস্ক হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ, কর্মহীন অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তাসহ করোনায় মৃত মানুষকে দাফন ও সৎকার করে আলোচনার শীর্ষে চলে আসেন এই জনপ্রতিনিধি। করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া এই লড়াকু সৈনিক এখন নিজেই জীবন যুদ্ধে লড়াই করছেন নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে। সামান্য এক নারী ঘটিত বিষয়ে মামলার আসামি হয়ে পলাতক জীবন যাপন করতে হচ্ছে তাকে। জনৈক সাইদা শিউলি নামক এক নারী নিজেকে খোরশেদের স্ত্রী দাবি করেছেন। সেইসাথে খোরশেদের সাথে তার সকল ধরনের শারীরিক এবং মানসিক সম্পর্কের প্রমাণ ও তাঁর কাছে আছে বলে গণমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন।

শিউলির ভাষ্যমতে, খোরশেদ শুধু তার সাথে প্রেমই করেননি, তাকে বিয়ে করেছিলেন এবং তার কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকাও হাতিয়ে নিয়েছেন। খোরশেদ শিউলীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি শিউলির কাছ থেকে টাকা নিয়ে আমোদ-ফুর্তি করেছেন কিন্তু যখনই বিষয়টি খোরশেদের স্ত্রী জানতে পারে তখনই খোরশেদ অ্যাবাউট টার্ন করে ফেসবুক লাইভে এসে শিউলির বিষয় অকথ্য মিথ্যাচার করে। সেইসাথে বউয়ের হাত থেকে বাঁচতে ফেরদৌসী আক্তার রেহানা নামক এক কথিত মানবাধিকারকর্মীকে দিয়ে শিউলির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালান খোরশেদ। আর এতে ক্ষুব্ধ শিউলি খোরশেদ ও রেহেনার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। সেই থেকে খোরশেদ আর রেহেনা পলাতক আছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ