নারায়ণগঞ্জ মেইল: সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জের বাজারে আবারও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা করে। শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) প্রধান পাইকারি বাজার দ্বিগুবাবু বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি’র তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশের বেশি। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৭ শতাংশের বেশি। আর বোতল ও খোলা উভয় ধরনের সয়াবিন তেলের দামও বেড়েছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে পাম সুপার তেলের দাম। বোতলের সয়াবিন তেলের দাম লিটারে বেড়েছে পাঁচ টাকা। আর খোলা সয়াবিন ও পাম সুপারের দাম কেজিতে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
তবে মোটা চালের দাম না কমলেও চিকন ও মাঝারি মানের চালের দাম অতি সামান্য পরিমাণ কমেছে। গত সপ্তাহের ৫৮ টাকা কেজি চাল এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫৭ টাকা। আদা ও চাল ছাড়াও দাম কমার তালিকায় রয়েছে ছোলা, আলু ও ময়দা। তবে এই সপ্তাহে কমেছে আদার দাম। আমদানি ও দেশী দুই ধরনের আদার দামই কমেছে। টিসিবির হিসাব বলছে, গত এক সপ্তাহে আদার দাম কমেছে সাড়ে ১২ শতাংশ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশি প্রতি কেজি আদার দাম কমেছে ১০-২০ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ ১০০-১৪০ টাকা কেজি আদা এখন ৯০-১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। আর ৮০ টাকা কেজি আমদানি আদা পাওয়া যাচ্ছে ৭০ টাকায়।
বাজারে এক লিটারের যে বোতল পাওয়া যাচ্ছে তার গায়ে ১৩৯ টাকা লেখা রয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ খুচরা ব্যবসায়ী এই সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন ১৪৫ টাকা। বোতলে ভরা এক লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকা দরে। এ বিষয়ে ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সয়াবিন তেলের বাজার বাড়তি। বোতলের গায়ে লেখা থাকুক না কেন, এক লিটারের বোতল নিতে হলে ১৪৫ টাকায় দিতে হবে।’
খোলা সয়াবিনের দাম বাড়ার তথ্য মিলেছে বাজারে। দু’দিন আগে ১৩০-১৩২ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া খোলা সয়াবিন তেল এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৩৬ টাকায়। এর সঙ্গে বেড়েছে পাম সুপারের দাম। ১২০-১২২ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাম সুপারের দাম বেড়ে ১২৫-১২৭ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫-১০ টাকা বেড়ে পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ৩০-৩৫ টাকায় নেমেছিল। পেঁয়াজের দাম বাড়ার প্রসঙ্গে ব্যবসায়ী মনু মিয়া বলেন, ‘হঠাৎ করে পেঁয়াজের চাহিদা বেড়ে গেছে। এ কারণে দামও বাড়ছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কিছু সবজির দাম কমেছে। আর অধিকাংশ সবজির দাম আগের মতোই আছে।
সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে নতুন আসা ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। রোজার শুরুতে ১২০ টাকায় উঠে যাওয়া বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা। তবে রোজার শুরুতে অস্বাভাবিক দাম বেড়ে যাওয়া শসার দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে। মানভেদে শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ টাকা এবং রোজার শুরুতে ছিল ৮০ টাকা। পটলের কেজি ৩০-৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা। গত শুক্রবার ৬০-৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম কমে ৪০-৫০ টাকা হয়েছে। ঢেঁড়সের কেজিও বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৬০ টাকা। ৬০-৮০ টাকা বিক্রি হওয়া ঝিঙের দাম কমে ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর লাউয়ের পিস আগের সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা।
বেশিরভাগ সবজির দাম কমার মধ্যে সজনের ডাটার দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সজনের ডাটার দাম বেড়ে ৯০-১০০ টাকা হয়েছে। পাকা টমেটো আগের সপ্তাহের মতো ২৫-৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে নতুন আসা কাঁকরোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা। কাঁকরোলের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কচুর লতি। প্রতিকেজি কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। কাঁচাকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা।
ব্রয়লার মুরগি আগের মতো ১৪০-১৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৭০ টাকা। ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে আগের মতোই ২৮-৩০ টাকা। প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৭০ টাকা।