নারায়ণগঞ্জ মেইল: একদিন আগে পরে চোখের সামনে মা-বাবার শেষ নিঃশ্বাস নিতে দেখেছেন। টাকার অভাবে ভাই-বোন, ভাগিনা ও নানীর চিকিৎসাও চালিয়ে নেয়াটা সংশয়ে। ভেবে ছিলেন তাদেরও বুঝি বাঁচাতে পারবো না। তাই বারবার আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করছিলেন মোসাম্মদ সাথী আক্তার।
দুই দিন পরই সেই অসহায় সাথীর ভাষ্য, ‘আল্লাহ নিজে এমপি সাবের বউরে আমাগো কাছে পাঠাইছে’। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সহধর্মীনী সালমা ওসমান লিপির দেয়া এক লাখ টাকা হাতে পেয়ে এমনটাই বললেন প্রতিবেদকের কাছে।
গত ২৩ এপ্রিল ফতুল্লার পশ্চিম তল্লায় ফ্ল্যাটে গ্যাস বিস্ফোরণে দুটি পরিবারের ১১ জন দগ্ধ হয়। এর মধ্যে সাথীর পরিবারের ৬জন দগ্ধ হয়ে বাবা হাবিবুর রহমান ও মা আলেয়া বেগম মারা যায়। আর ছোট ভাই নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী লিমন, ছোট বোন তাবাসসুম মীম, মীমের ৪৫ দিনের সন্তান মাহিরা ও নানী সামান্তা বেগম এখনও বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। অর্থ সংকটে অনিশ্চয়তায় ছিল তাদের চিকিৎসা। তাদের এই অসহায়ত্ব নিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। ২৭ এপ্রিল অনলাইনে নিউজটি দেখে সব রকম সহযোগীতার কথা দেন সালমা ওসমান লিপি। যিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান। আজ সেই অনুযায়ী ওই পরিবারটির জন্য ১লাখ টাকা পাঠিয়ে দেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে নারায়ণগঞ্জ সাকির্ট হাউজ প্রাঙ্গনে ওই এক লাখ টাকা লিপি ওসমানে পক্ষ থেকে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা জোহুরা। পরিবারটির পক্ষ থেকে সাথী ও মো. বিপ্লব টাকা বুঝে নেন। এসময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল লাইভ নারায়ণগঞ্জ’র প্রধান নির্বাহী ও স্বদেশ প্রতিদিন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মোহাম্মদ কামাল হোসেন, দৈনিক অগ্রবাণী পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মো. রাশিদ চৌধুরী ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল লাইভ নারায়ণগঞ্জ’র সিনিয়র স্টাফ রির্পোটার গোলাম রাব্বি উপস্থিত ছিলেন।
দুর্ঘটনার পর থেকে ৪৫ দিনের দগ্ধ সন্তান-স্ত্রী ও স্বজনদের জন্য সব সময়ই চিন্তার ভাঁজ চোখে মুখে ফোটে উঠেছিল অর্থ সংকটে থাকা মো. বিপ্লবের। আজ সালমা ওসমান লিপির সহযোগীতা পেয়ে চোখে মুখে আশার আলো। মো. বিপ্লব বলেন, ‘দুর্ঘটনার পরে অনেক পরিচিত মানুষকেও অপরিচিত মনে হয়েছে। অনেকে একটি বারের জন্য খবরও নেয়নি। আবার অনেক অল্প পরিচিত কিংবা অপরিচিত মানুষও পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আল্লাহ সালমা ওসমান লিপিকে দীর্ঘজীবী করুন।’