নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে আসার যারা বিরোধিতা করছেন, তারাই মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন। বিভিন্ন সময় কোন না কোন রাষ্ট্রপতি বা রাষ্ট্রপ্রধান আসবেন সেটাকে কেন্দ্র করে কেউ কেউ উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জেলা ও মহানগরের আয়োজন সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী কর্তৃক সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
শিখন সরকার আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও কেন আমরা সংখ্যালঘু বলে অত্যাচারিত। কেন আমাদের ওপর হামলা-মামলা হয়? মুক্তিযুদ্ধের সময় কে হিন্দু, কে বৌদ্ধ, কে খ্রিস্টান, কোন ভেদাভেদ ছিল না, সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে। স্বাধীনের পর থেকে আজ পর্যন্ত কি কেউ বলতে পারবে কোন মুসলিম পল্লীতে কোন হিন্দু হামলা করেছে? আমি বলতে চাই আমাদের সংখ্যালঘুদের বাঁচান অন্যথায় রোহিঙ্গাদের মতো কোনো একটি দ্বীপে পাঠিয়ে দেন আমরা সেখানে গিয়ে বসবাস করি।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি দাবি জানিয়ে বলেন বাংলাদেশের যেমন একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প রয়েছে, আশ্রয়ন প্রকল্প রয়েছে, তেমনি সারা দেশে একটি করে হিন্দু পল্লী করে দিতে হবে। এছাড়াও ‘ক’ তফসিল ভুক্ত সম্পত্তিতে হিন্দুদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। নারায়ণঞ্জে সিটি কর্পেোরেশনে পঞ্চাশ হাজারের অধিক হিন্দু ভোটার রয়েছে আর এদের মধ্যে ৮৬ শতাংশেরই কোন বাড়ি নেই।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন নারায়ণগঞ্জ শ্মশান ঘাট নিয়ন্ত্রণ করেন সিটি কর্পোরেশন অথচ মামলা করেছে শ্মশান কমিটি। কেন সিটি কর্পোরেশর মামলার বাদী হতে পারতেন তিনি কেন হলেন না।
তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, নারায়ণগঞ্জ ডায়াবেটিস হাসপাতাল সাধু নাগ মহাশয়ের জায়গায় নির্মিত। আমরা চাই হাসপাতালটির নাম তার নামেই নামকরণ করা হোক। অপরদিকে ৩০০ শয্যা হাসপাতাল রণদা প্রসাদ সাহার নামে নামকরণ এর জোর দাবি জানাই।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভীর উদ্দেশ্যে শিখন সরকার বলেন, আপনি মাননীয় প্রধাণমন্ত্রীর কাছে বলেছিলেন দেবোত্তর সম্পত্তি রক্ষা করবেন, অথচ আপনার পরিবারের লোকেরাই সে সম্পত্তি দখল করছে। আপনি মন্দিরের সম্পত্তি দখল করছেন আবার মন্দিরে গিয়ে ফুলও গ্রহন করছেন। আপনি যদি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি এতোই ভালোবাসা তাহলে ফিরিয়ে দেন হিন্দুদের যে সম্পত্তি আপনি ও আপনার পরিবার দখল করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপনের সভাপতিত্বে এসময়ে আরোও উপস্থিত ছিলেন, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সাংবাদিক উত্তম সাহা, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অরুণ কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার সাহা, মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিমাই চন্দ্র দে, ফতুল্লা থানা পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিবু দাস, বন্দরের সভাপতি শংকর দাস, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস, সিদ্ধিরগঞ্জের সভাপতি শিশির ঘোষ অমর, সোনারগাঁওয়ের সাধারণ সম্পাদক এড. প্রদীপ ভৌমিক, রূপগঞ্জের সভাপতি গনেশ পাল, আড়াইহাছারের সদস্য সচিব রাজিব ভৌমিক, পূজা পরিষদ নেতা সুশীল দাস, তপন ঘোষ, তপন ঘোপ সাধু, অরুণ দেবনাথ, রাজিব দাস, সঞ্জয় কুমার দাস, রিপন দাস, কৃষ্ণ আচার্য, ভজন চন্দ্র দাস, বিজয় দাশ, সুজন বিশ্বাস প্রমুখ।
এছাড়াও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, যুব ঐক্য পরিষদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গোপীনাথ দাশ স্মৃতি সংঘের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন থানা ও উপজেলা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেন।