নারায়ণগঞ্জ মেইল: দরজায় কড়া নাড়ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করার জন্য দলের হাই কমান্ডে লবিংয়ের পাশাপাশি নিজস্ব কর্মী সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী গণসংযোগের প্রাথমিক কাজটুকু সেরে ফেলছেন অনেকেই।
তবে এদের মধ্যে কয়েকজন ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির দলীয় প্রতীক পেতে টাকার বস্তা নিয়ে নেমেছেন। মূলত যারা বিগত দিনের আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে ছিলেন না বরং সরকারি দলের সাথে আঁতাত করে অগাধ টাকার মালিক হয়েছেন তারাই টাকা দিয়ে বিএনপির মনোনয়ন কেনার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন।
দলীয় মনোনয়ন পেতে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত তারা টাকা ছিটিয়ে যাচ্ছেন। টাকায় বিএনপি’র মনোনয়ন কেনা যায়, রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করতে হয় না। লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান থেকে শুরু করে ঢাকায় বিএনপি’র শীর্ষ নেতৃত্বকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে দলীয় মনোনয়ন বাগিয়ে আনা যাবে- এমনটাই প্রচার করছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী কয়েকজন শিল্পপতি ও তার অনুসারীরা। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দল বিএনপি তার ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করে টাকায় মনোনয়ন বিক্রি করবে- এটা তৃণমূল কোনভাবেই মানতে পারবে না। তাই এ ধরনের অপপ্রচারের বিচার চান তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি নির্বাচনী আসনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি’র দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছেন দুইজন ব্যবসায়ী। নারয়ণগঞ্জ সদর ও বন্দর থানা নিয়ে গঠিত এই আসনকে ধরা হয় পুরো জেলার চালিকাশক্তি হিসেবে। তাই এই আসনের দিকে লোলুপ দৃষ্টি থাকে সব সময়। এবারো দুজন শিল্পপতি এই আসন থেকে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছেন। এদের মধ্যে একজন হচ্ছে মডেল গ্রুপের কর্ণধার মাসুদুজ্জামান মাসুদ ওরফে মডেল মাসুদ এবং অপরজন হচ্ছেন প্রাইম গ্রুপের মালিক আবু জাফর বাবুল ওরফে প্রাইম বাবুল।
এই দুই ব্যবসায়ীর বিগত দিনে কোন রাজনৈতিক অবদান নেই। কোনো দলের সাথেই তারা সম্পৃক্ত ছিলেন না বরং আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তিদের সাথে মিলেমিশে ব্যবসা-বাণিজ্য করেছেন। বিএনপির মিটিং মিছিলে না থাকলেও নারায়ণগঞ্জের গডফাদার শামীম ওসমান এবং সেলিম ওসমানের সাথে একই মঞ্চে প্রায়ই দেখা গেছে তাদের। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পরপরই তাদের আবির্ভাব। নতুন করে ভোল পাল্টে ব্যবসায়ী থেকে বনে যান পুরোদস্তুর রাজনীতিবিদ। বিএনপির কিছু বিপথগামী উচ্ছিষ্টভোগী নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে করছেন শোডাউন, আয়োজন করছেন ভুরিভোজের। তবে গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে বিএনপির একাধিক ত্যাগী এবং রাজপথের লড়াকু প্রার্থী থাকায় এই দুই ব্যবসায়ীর সকল টাকাই যে জলে যাচ্ছে তা নির্দ্বিধায় বলে দেয়া যায়।