নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, বিএনপি একটি জনগণের দল। গত ১৫ বছর ধরে এই জনপ্রিয় দলটিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য সরকারী দল এমন কোনো পন্থা নেই যে পন্থা অবলম্বন করে নাই। সকল পন্থা এই দেশের জনগণ বন্ধ করে দিয়েছে। এতেই প্রমাণ করে দেশের ৭০ থেকে ৮০% লোক বিএনপিকে সমর্থন করে। যার জন্যই বর্তমান সরকার দিনের বেলায় ভোট দিতে ভয় পায়। তারা উপাধি পেয়েছে নিশিরাতে ভোট চোর সরকার। আজকে দেশের জনগণ বলে এ সরকার কোন নির্বাচিত সরকার নয়। ২০১৪ সালে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার কারনে ১৫৩ টি আসনে তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিল। আর ২০১৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনা এদেশের মানুষের সাথে এবং বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের সাথে প্রতারণা করে হাতে তজবি নিয়ে ধার্মিকতার ভাব দেখিয়ে মিথ্যা কথা বলে সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিয়ে বিএনপির সহ অন্যান্য দলকে নির্বাচনে এনে প্রতারণা করেছে। শেখ হাসিনার অধীনে আর কোন নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। ৩০ তারিখে নির্বাচন দিনের বেলা কোন ভোট হয়নি আগের দিন আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মীরা প্রশাসনের কিছু লোকদের নিয়ে রাতের বেলায় ব্যালট বাক্স ফুল করে ফেলেছে। পরের দিন তারা নিজেদের বিজয় ঘোষনা করেছে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ও নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপি’র আওতাধীন ১৩নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এড. সাখাওয়াত হোসেন খান এসব কথা গুলো বলেন। রবিবার ( ২১মে ) বিকেল শহরের চাষাড়া এলাকায় এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, আগামীতে শেখ হাসিনার অধীনে এদেশে আর কোন নির্বাচন হবে না। তত্ত্ববোধক সরকার ছাড়া আমরা আর কোন নির্বাচনে যাব না। বারবার আর আমাদেরকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলতে পারবেনা। এদেশের মানুষ তোমার সকল প্রতারণা ধরে ফেলেছে। দেশের মানুষের বজ্র কন্ঠে আওয়াজ উঠেছে আর শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন নয়। এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনার পদত্যাগ। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। জনগণের ভোটের অধিকার জনগণকে ফিরিয়ে দিতে হবে।
তিনি বলেন, এদেশের মানুষের ভোটার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এদেশের সাধারণ জনগণ তারেক রহমানের দিকে তাকিয়ে আছেন। আগামীতে তারেক রহমান যে আন্দোলন সংগ্রামে ডাক দিবেন। সেই আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপিসহ এদেশের মানুষ সাধারণ জনগণ সাড়া দিয়ে সরকারের পতন ঘটাবে ইনশাআল্লাহ। সরকার তারেক রহমানের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে বিতর্কিত করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। দেশের মানুষ তাদের সকল অপকৌশল বুঝতে পেরেছে। যার জন্য এদেশের সাধারণ মানুষ চায় তারেক রহমান দেশে ফিরে আসুক এবং এদেশের স্বাধীনতার ঘোষকের ছেলে হিসাবে মানুষের ভোটের অধিকার জন্য কথা বললে।
আজকে এদেশের মানুষ এসরকারের নির্যাতনে নিষ্পত্তি। আজকে শুধু হত্যা গুন খুন নয়। এদেশের সাধারণ মানুষের পেটে লাথি মেরেছে এসরকার। তারা নির্বাচনের আগে বলেছিল ১০টাকা সের চাল খাওয়াবে ঘরে ঘরে চাকরি দিবে। কিন্তু আজকে মোটা ৮০ টাকা কেজি, আদার কেজি তিনশ টাকা। পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে। বাংলাদেশের ডলার কোথায় গেল। এদেশের এমপি মন্ত্রীদের পকেটে হল ডলার। দেশে ডলার সংকট দেখা দিয়েছে ব্যাংক গুলো দেওলিয়া হয়ে পড়েছে। যার জন্য আজকেই দেশে দুর্ভিক্ষ অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। আসলে আওয়ামী লীগের ইতিহাস হল দুর্ভিক্ষের ইতিহাস। ১৯৭৪ সালে তারা দুর্ভিক্ষ উপহার দিয়েছিল। ২০২৩ সালের দুর্ভিক্ষের প্রতিধ্বনি। এই দুর্ভিক্ষ থেকে দেশকে বাঁচাতে হলে এ সরকারকে বিতাড়িত করতে হবে। এবং দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মহানগর বিএনপির একটি সুশৃংখল রাজনৈতিক দল। আমরা সকলকে নিয়েই মহানগর বিএনপির রাজনীতি করতে চাই। কাউকে বাদ দিতে চাই না। যারা বিএনপি করেন, বিএনপিকে ভালোবাসেন এবং বিএনপির আদর্শ গঠনতন্ত্র মেনে যারা বিএনপি করবেন আমাদের দায়িত্ব হল তাদেরকে দলের মধ্যে পদায়ন করা। যোগ্য ব্যক্তিদেরকে যোগ্য স্থানে বসানো। আমরা কিন্তু এই সম্মেলনের মাধ্যমে সেই কাজটি করছি। যারা ইতিপূর্বে দল থেকে দূরে ছিল আমি চেষ্টা করছি তাদেরকে দলের মধ্যে সক্রিয় করার জন্য। আমরা চেষ্টা করছি সকল ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ মহানগর বিএনপি প্রতিষ্ঠা করার জন্য। সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলন সংগ্রাম করার জন্য আমরা নিরবসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। সরকারের কোন দোসরকে আমরা এই দলে নিবো না এবং তাদেরকে বিভিন্ন পদে পদায়ন করবো না। দলকে সুসংগঠিত করার জন্য এ আহবায়ক কমিটির আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের সাথে থাকুন ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে সংগ্রাম করুন। মহানগর বিএনপিকে সারা দেশের মধ্যে একটি মডেল হিসাবে গড়ে তুলবো ইনশাল্লাহ।
সম্মেলন শেষে শেখ আঞ্জুম আহম্মেদ রিফাতকে সভাপতি, মো. হারুন শেখকে সিনিয়র সহ-সভাপতি ও হিরা সরদারকে সাধারণ সম্পাদক, মো. সোহেল বেপারীকে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মনোয়ার হোসেন সোহেলকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং দুলাল হোসেনকে সাংগঠনিক সম্পাদক ও মো. সনিকে প্রচার সম্পাদক করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ মহানগর ১৩নং ওয়ার্ড বিএনপির আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
মহানগর ১৩নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো. হারুন শেখ’র সভাপতিত্বে ও বিএনপি নেতা শেখ আঞ্জুম আহম্মেদ রিফাতের সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এড. জাকির হোসেন, প্রধান বক্তা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আহ্বায়ক এড. সরকার হুমায়ূন কবির, যুগ্ম আহ্বায়ক মনির হোসেন খান, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ রেজা রিপন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এড. রফিক আহমেদ, ডা.মজিবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির আহ্বায়ক মাসুদ রানা, সদস্য সচিব এড. এইচ এম আনোয়ার প্রধান, বন্দর থানা বিএনপি’র সদস্য সচিব নাজমুল হক রানা।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহমুদুর রহমান, বরকত উল্লাহ, মাকিত মোস্তাকিম শিপলু, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ সেলিম আহমেদ, নাজমুল হক, চঞ্চল মাহমুদ, মোহসীন মিয়া, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহেদ আহমেদ,মহানগর ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ মামুনসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।