নারায়ণগঞ্জ মেইল: ফতুল্লার গাবতলী টাগারপাড় এলাকায় ২০১৫ সালের ২৩ জুলাই রাতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছিলেন ডিস ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম বাবু। একমাত্র উপার্জনকারী বাবুর মৃত্যুর পর দুই সন্তান নিয়ে অনেকটা বিপাকে পড়েগিয়েছিলেন স্ত্রী মরিয়ম আক্তার। স্বামী হত্যার বিচারের দাবীর পাশাপাশি সংসার চালানো নিয়ে যখন দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন তখনই নিহত বাবুর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমানের পুত্র আজমেরী ওসমান। সেই ২০১৫ সাল থেকেই বাবুর পরিবারের সংসারের খরচ ও দুই সন্তানের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন আজমেরী ওসমান। নিহত বাবুর পুত্র মিরাজ বর্তমানে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ও কন্যা তানজিলা মাদ্রাসার হাফিজি বিভাগে লেখাপড়া করছেন। নিহত বাবুর ভাই সোহেল জানান, আমার ভাইয়ের মৃত্যুর পর আজমেরী ওসমান আমাদের পাশে না দাঁড়ালে আমার ভাইয়ের সন্তানরা লেখাপড়া করা তো দূরের কথা হয়তো বেঁচে থাকাই দায় হয়ে পরতো।
শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকার শতাধিক অসহায় পরিবারের সংসর চালান আজমেরী ওসমান। প্রতি মাসের নির্দিষ্ট তারিখে সেই অসহায় পরিবারগুলোর কাছে সংসার খরচ পৌঁছে দেন আজমেরী ওসমানের লোকজন। এছাড়াও অসহায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার খরচ বহন, মসিজদ, মাদ্রাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন। অনেক অসুস্থ্য মানুষকে আর্থিক অনুদান দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন আজমেরী ওসমান। করোনা পরিস্থিতিতে সুরক্ষা সামগ্রী ও অসহায়দের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছিলেন তিনি। ফতুল্লারা নবীনগর এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হাসান দীর্ঘ ৪ বছর যাবত কিডনী জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে টাকার অভাবে যখন চিকিৎসা করতে পারছিলেন না তখন তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছিলেন আজমেরী ওসমান। সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত দেলোয়ার হোসেনের (৫০) শয্যা পাশে দাড়িঁয়েছিলেন আজমেরী ওসমান। একটি সড়ক দূর্ঘটনায় তার মেরুদন্ডের হাড় ভেঙ্গে যায়। এরপর চিকিৎসাসেবা নিতে আসে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাসেবা বাবদ দেড়লক্ষ টাকার চুক্তি হলেও সহায় সম্বল বিক্রি করে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা খরচ দিলেও সুস্থ্য হয়নি দেলোয়ার। তাছাড়া আরো টাকার অভাবে চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যায় দেলোয়ারের। তখন আজমেরী ওসমান দেলোয়ারের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছিলেন।
করোনা মোকাবেলায় সরকারী/বেসরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বন্ধ ছিল সকল ধরনের প্রতিষ্ঠান। এমনকি প্রয়োজন ছাড়া কোনরকম বাহিরে থাকতেও ছিল নিষেধাজ্ঞা। এমন সময় বিত্তশালী কিংবা মধ্যবিত্তরা জীবিকা নির্বাহ করতে তেমন কোন বাঁধার সম্মুখিন না হলেও ভোগান্তিতে ছিল পথ শিশু, দিন মজুর ও রিকশা চালকরা। তখন এসব খেটে খাওয়া নিম্নবিত্তদের জন্য সড়কে ঘুরে ঘুরে খাদ্য সামগ্রী দিয়েছিলেন প্রয়াত সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমানের পুত্র আজমেরী ওসমান। এছাড়াও নাসিম ওসমান স্মৃতি দু:স্থ ও জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন নামক সংগঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন জনসেবামূলক কাজ করে আসছেন আজমেরী ওসমান। তবে রাজনৈতিক ব্যক্তিরা সমাজসেবামূলক কাজগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করলেও প্রচার বিমুখ আজমেরী ওসমান কখনো নিজের এসব মানবিক কর্মকা-গুলো প্রচারের আলোয় আনতে চাননি।
এদিকে একের পর মানবিক কর্মকান্ড পালনের পরেও একটি মহল শুধু আজমেরী ওসমানের দোষ খুঁজে বেড়ায় বলে আফসোস করেন সাহায্য পাওয়া এসব ভুক্তভোগী মানুষ। তাদের মতে যারা আজমেরী ওসমানের দোষ ধরেন তারা অসহায় মানুষের জন্যে কতটুকু অবদান রেখেছেন তা জনসম্মুখে প্রকাশ করেন। তাহলে বোঝা যাবে সাধারণ মানুষের জন্যে কার কতটুকু ভালোবাসা রয়েছে। এভাবে একজন নিবেদিতপ্রাণ মানুষকে অবজ্ঞা করা কতটা যৌক্তিক সে প্রশ্নও তাদের।