নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে দুইজন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অধিবাসী আর দুইজন সোনারগাঁ থানার। এই চারজনের মধ্যে শুধুমাত্র সাবেক এমপি মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের রয়েছে দুই থানায় ব্যাপক পরিচিতি কারণ ইতিপুর্বে ২০০৮ সালে তিনি সোনারগাঁ এবং সিদ্ধিরগঞ্জে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ভোটের ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। বাকি তিনজন শুধুমাত্র নিজ থানায় পরিচিত।
সূত্রে প্রকাশ, নতুন সীমানা নির্ধারণের ফলে সোনারগাঁ এবং সিদ্ধিরগঞ্জ মিলে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন গঠিত হয়েছে। এখন এই আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা চারজন। এই চারজন হলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ গিয়াসউদ্দিন, জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, সাবেক মন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিম এবং সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান।
সূত্র বলছে, এই চারজন মনোনয়ন প্রত্যাশীর মধ্যে সবচেয়ে অভিজ্ঞ হচ্ছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ অধ্যাপক রেজাউল করিম। তিনি সোনারগাঁ আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ছিলেন সরকারের মন্ত্রী। তবে সোনারগাঁ উপজেলার বাইরে বিশেষ করে সিদ্ধিরগঞ্জে তার তেমন একটা যাতায়াত ছিলো না। নেই নিজস্ব নেতাকর্মী কিংবা পরিচিতজন।
একই অবস্থা সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের তিনি ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সোনারগাঁ উপজেলা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন থেকে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। এবারও তিনি এই আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী তবে এবার সোনারগাঁ উপজেলার সাথে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যোগ হওয়ায় মান্নানের অবস্থা বেকায়দা হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা। কারণ তিনি সোনারগাঁ ছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জে তেমন একটা জনপ্রিয় নন। তাছাড়া বিভিন্ন সময় তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের মানুষকে নানা ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে বক্তব্য বিবৃতি দিয়েছেন। তাই এই অঞ্চলে তার জনপ্রিয়তা প্রায় শূন্যের কোঠায়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বর্তমান আহবায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ এতদিন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও নতুন সীমানা বিন্যাসে সিদ্ধিরগঞ্জ সোনারগাঁয়ের সাথে যোগ হওয়ায় তিনি পড়েছেন বিপাকে। কারণ নিজ এলাকা সিদ্ধিরগঞ্জের বাইরে সোনারগাঁয়ে তার তেমন একটা বিচরণ নেই। তাছাড়া সোনারগাঁয়ের ভোটারদের কাছে তিনি খুব একটা পরিচিত মুখ নন।
এই তিন প্রার্থীর চেয়ে পুরোপুরি ব্যতিক্রম হচ্ছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। কারণ সিদ্ধিরগঞ্জ এবং সোনারগাঁ দুই থানাতেই তার রয়েছে বিশাল জনপ্রিয়তা। ইতিপূর্বেও তিনি এই দুই থানায় নির্বাচনী প্রচারণার কাজে অংশ নিয়েছেন। এবারও তিনি সমান তালে সোনারগাঁ ও সিদ্ধিরগঞ্জে নির্বাচনী গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের ভোটারদের কাছে পরিচিত মুখ গিয়াসউদ্দিন ধানের শীষের মনোনয়ন দৌড়ে বাকি তিনজনের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এখন দেখার বিষয় কার ভাগ্যে জোটে বিএনপির টিকেট।