নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সেজান জুস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত শ্রমিকদের লাশ আজ বুধবার (৪ আগস্ট) স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সকাল থেকে স্বজনরা ভিড় করেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে। লাশ বুঝে পেলেও স্বজনদের কষ্ট প্রিয় মুখগুলো আর দেখে চেনার উপায় নেই। তারপরও লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন‑ এটাই যেন সান্ত্বনা।
বুধবার (৪ আগস্ট) সকাল থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে স্বজনদের ভিড় বাড়তে থাকে। আগেই স্বজনদের লাশ হস্তান্তরের খবর দেওয়া হয়েছে।
জুস কারখানায় নিহত ৫২ জনের মধ্যে ৪৮ জনের ডিএনএ প্রোফাইলিং করে লাশ শনাক্ত করার জন্য সিআইডির ফরেনসিক বিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ৪৮ লাশের মধ্যে ৪৫ জনের লাশ তারা শনাক্ত করেছন। বাকি তিনটি লাশের শনাক্তের কাজ এখনো শেষ হয়নি। শনাক্ত হওয়া ৪৫ লাশের মধ্যে ২৪টি আজ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সিআইডির এএসপি (নারায়ণগঞ্জ জেলা) হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমকে লাশ হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
লাশ নিতে আসা হালিমা বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আজ প্রায় একমাস আমার ছেলে মর্গে পড়ে আছে। আমি আমার ছেলের মুখ এখন পর্যন্ত চিনতে পারিনি। শুনছি মুখটাও নাকি পুড়ে গেছে।
আগুনে পুড়ে লাশ বিকৃত হওয়ার তথ্য সকল স্বজনদের জানানো হয়েছে। মর্গ থেকেই লাশ সৎকারের সকল ধর্মীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দেওয়া হবে। বাড়িতে কেবল দাফন হবে। দাফনের জন্য স্বজনদের সরকারের পক্ষ থেকে টাকাও দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস কারখানায় গত ৮ জুলাই বিকাল সাড়ে ৫টায় আগুনের সূত্রপাত হয়। কারখানার ছয় তলা ভবনটিতে তখন চার শতাধিক কর্মী কাজ করছিলেন। কারখানায় প্লাস্টিক, কাগজসহ মোড়ক বানানোর প্রচুর সরঞ্জাম থাকায় আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সব ফ্লোরে।
প্রচুর পরিমাণ দাহ্য পদার্থ থাকায় কয়েকটি ফ্লোরের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের ২০ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। সবমিলিয়ে এ ঘটনায় ৫২ জনের লাশ উদ্ধার হয়।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম বেভারেজের সেজান জুস কারখানায় আগুনে পুড়ে ৫২ শ্রমিক নিহতের ঘটনায় করা হত্যা মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করছে।