নারায়ণগঞ্জ মেইল: বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এড. তৈমূর আলম খন্দকারের রূপগঞ্জের বাড়িতে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হামলার বিষয়ে রহস্যের ধুম্রজাল সৃষ্টি হচ্ছে ক্রমশই। হামলার পরে তৈমুর দাবী করেন স্থানীয় যুবলীগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এ হামলা চালিয়েছে. অপরদিকে রূপগঞ্জ থানা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে অনুষ্ঠানে আসা বিএনপি নেতাকর্মীদের দুই গ্রুপের মধ্যে মঞ্চে বসা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া পুরো অনুষ্ঠানের ছবি ও ভিডিও ফুটেজ বিএনপি নেতাকর্মীদের কাছে পাওয়া গেলেও হামলার সময়ের ছবি বা ভাংচুরের একটি ভিডিও ফুটেজও তারা দেখাতে সক্ষম না হওয়ায় প্রকৃত ঘটনা নিয়ে রহস্য দানা বাঁধছে রাজনৈতিক মহলে। হামলায় নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার গাড়ি ভাংচুর করা হলেও এড. তৈমূর আলম খন্দকারের গাড়ি ছিলো অক্ষত। তাছাড়া পুরো অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাওয়ার পরে হামলার ঘটনা ঘটায়ও সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে সর্বত্র। রূপগঞ্জের অনেকে আবার বলাবলি করছে আসন্ন তারাবো পৌরসভা নির্বাচনে নিজের মেয়েকে মেয়র পদে নির্বাচন করানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন তৈমূর। তারই একটি বিশাল বিজ্ঞাপণী প্রচার হয়ে গেলো সেদিন জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হামলার নাটকের মাধ্যমে।
এদিকে হামলার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম তার ফেসবুক পেজে লিখেন,“একটা নিউজ দেখলাম যে রুপগঞ্জে কথিত শুসিল মাহমুদুর রহমান মান্না ও বিএনপি নেতা তৈমুর রহমান এর উপর হামলা হয়েছে। এ হামলায় বড় বড় রাম দা নিয়ে আসছে মারার জন্য। এ কারনে মিঃ মান্না কালকে আবার প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন ঢাকা প্রেস ক্লাবের সামনে। বড় বড় রাম দা নিয়ে আসলো মিঃ মান্নাকে মারতে আর তিনি অক্ষত অবস্থায় সুস্থ হয়ে ফিরে গেলেন ঢাকায়!!!! মিঃ মান্নার কাছে কি মনে হয় বাংগালী জাতি বোদাই(দূঃখিত এ শব্দ ব্যাবহারের জন্য) ???এতো বেকুব মনে হয় বাংলার জনগনকে???আগে অনেক বেকুব বানাইছে ধর্মের দোহাই দিয়ে এখন আর বাংগালী জাতি বেকুব না। এ নাটক যে মিঃ মান্নার মঞ্চায়িত জনগন তা জানে”।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল শিকদার সময় নিউজকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে সন্ধ্যার পর বিভিন্ন অনলাইনে নিউজে দেখলাম আমাকে জড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ বা যুবলীগের কোন নেতা-কর্মী আজকে ওই এলাকায় যায় নি। হামলার প্রশ্নই আসে না।’
ছাত্রলীগের এই নেতা দাবি করেন, যদি কোন ঘটনা ঘটে থাকে তবে সেটা বিএনপির নিজেদের মধ্যে কোন্দলের কারণে হয়েছে। এখন তারা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের উপর মিথ্যা দোষ চাপিয়ে মূল ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে।
একই দাবি করে রূপগঞ্জ থানা যুবলীগ সভাপতি কামরুল হাসান তুহিন সময় নিউজকে বলেন, ‘আমাদের রূপগঞ্জ উপজেলায় বিএনপির দলীয় নেতৃত্ব ও আধিপত্য নিয়ে তাদের তিনটি গ্রুপ সৃষ্টি হয়েছে। তৈমূর গ্রুপ, কাজী মনির গ্রুপ এবং দীপু চৌধুরি গ্রুপ। তাদের এই দলীয় কোন্দলের কারণে ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময়ে নিজেদের মধ্যে অনেক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। নিজেরাই নিজেদের সভা সমাবেশের চেয়ার টেবিল ভাংচুর করেছে। এলাকাবাসী এর সাক্ষী। তিনি বলেন, সামনে কাঞ্চন পৌরসভার নির্বাচন হবে। সেখানে প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির এই তিন গ্রুপের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চলছে।’
যুবলীগ সভাপতি কামরুল হাসান তুহিন বলেন, ‘আমি শুনেছি আজকে তাদের কর্মসূচীর মঞ্চে সীটে বসা নিয়ে নেতাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। এর জের ধরেই নিজেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ভাংচুর করেছে। এখন দায় চাপানোর চেষ্টা করছে ছাত্রলীগ যুবলীগের উপর। বিএনপির উদ্দেশ্যই হচ্ছে কোন একটা ইস্যু সৃষ্টি করে সেই দায় আওয়ামীলীগের উপর চাপিয়ে আওয়ামীলীগের ভাবমূর্তি নষ্ট করা। এবং এটা তারা সব সময় করে থাকে।’অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল শিকদার সময় নিউজকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে সন্ধ্যার পর বিভিন্ন অনলাইনে নিউজে দেখলাম আমাকে জড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ বা যুবলীগের কোন নেতা-কর্মী আজকে ওই এলাকায় যায় নি। হামলার প্রশ্নই আসে না।’
ছাত্রলীগের এই নেতা দাবি করেন, যদি কোন ঘটনা ঘটে থাকে তবে সেটা বিএনপির নিজেদের মধ্যে কোন্দলের কারণে হয়েছে। এখন তারা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের উপর মিথ্যা দোষ চাপিয়ে মূল ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে।
একই দাবি করে রূপগঞ্জ থানা যুবলীগ সভাপতি কামরুল হাসান তুহিন সময় নিউজকে বলেন, ‘আমাদের রূপগঞ্জ উপজেলায় বিএনপির দলীয় নেতৃত্ব ও আধিপত্য নিয়ে তাদের তিনটি গ্রুপ সৃষ্টি হয়েছে। তৈমূর গ্রুপ, কাজী মনির গ্রুপ এবং দীপু চৌধুরি গ্রুপ। তাদের এই দলীয় কোন্দলের কারণে ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময়ে নিজেদের মধ্যে অনেক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। নিজেরাই নিজেদের সভা সমাবেশের চেয়ার টেবিল ভাংচুর করেছে। এলাকাবাসী এর সাক্ষী। তিনি বলেন, সামনে কাঞ্চন পৌরসভার নির্বাচন হবে। সেখানে প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির এই তিন গ্রুপের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চলছে।’
যুবলীগ সভাপতি কামরুল হাসান তুহিন বলেন, ‘আমি শুনেছি তাদের কর্মসূচীর মঞ্চে সীটে বসা নিয়ে নেতাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। এর জের ধরেই নিজেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ভাংচুর করেছে। এখন দায় চাপানোর চেষ্টা করছে ছাত্রলীগ যুবলীগের উপর। বিএনপির উদ্দেশ্যই হচ্ছে কোন একটা ইস্যু সৃষ্টি করে সেই দায় আওয়ামীলীগের উপর চাপিয়ে আওয়ামীলীগের ভাবমূর্তি নষ্ট করা। এবং এটা তারা সব সময় করে থাকে।’
বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এবং জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার হামলার বিষয়ে জানিয়েছিলো, প্রতি বছরের মতো তার জন্মদিন উপলক্ষে সোমবার বিকেলে স্থানীয় এলাকাবাসীর ব্যানারে রূপগঞ্জে তাদের খন্দকার বাড়িতে বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি ও দুঃস্থ মানুষের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ করার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। বিকেল চারটার মধ্যে তিনি, তার মেয়ে মার-ই-য়াম এবং মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ মঞ্চে উপস্থিত হন।
সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে মাহমুদুর রহমান মান্নার বক্তব্য শুরু হলে তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে দোয়া মাহফিলে আসা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মারধর করে। মাহমুদুর রহমান মান্নাকে বহন করা মাইক্রোবাসসহ বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাংচুর করে তারা। পরে মঞ্চসহ চেয়ার টেবিল ও সাইন্ড সিস্টেম সরঞ্জাম ভাংচুর করে ব্যানার ছুঁড়ে ফেলে দেয়।
তৈমুর আলম দাবি করেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর নির্দেশে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল শিকদারের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডাররা যৌথভাবে রামদা, হকিস্টিক, লোহার রড ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। সন্ত্রাসীদের এই হামলায় তিনিসহ, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, উপজেলা মহিলা দল নেত্রী ফাতেমা বেগম, পারভীন বেগম, যুবদল নেতা আশরাফুল হক, ছাত্রদল নেতা সজিব আহমেদসহ তাদের কমপক্ষে ২৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।