‎বন্দরে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দোসররা এখন বিএনপির ছায়াতলে!

নারায়ণগঞ্জ মেইল:বন্দরে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির একদল নেতাকর্মী নিজেদের রাজনৈতিক পরিচয় পাল্টে এখন বিএনপির নেতাদের ছায়াতলে অবস্থান নিচ্ছেন। বিএনপি নেতাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, মিটিং-মিছিল—সব ক্ষেত্রেই তাদের পদচারণা এখন চোখে পড়ার মতো।



‎হাসিনা-বিরোধী আন্দোলনে দীর্ঘদিন অগ্রভাগে লড়াই করা তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীরা অভিযোগ করছেন, দলীয় ত্যাগী ও নির্যাতিত কর্মীদের উপেক্ষা করে এসব নব্য বিএনপি নেতারা এখন নিজেদের বড় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। অনেকেই অতীতে সক্রিয়ভাবে বিএনপির বিপক্ষে কাজ করলেও এখন ভোল পাল্টে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের আশ্রয়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন।



‎খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত সরকার আমলে বন্দরের বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মামলা, নির্যাতন, অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির বেশ কয়েকজন দোসর এখন নিয়মিত বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। এতে ত্যাগী বিএনপি নেতাদের মাঝে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ আছে—কখনো কখনো এসব আওয়ামী লীগপন্থী ব্যক্তিরাই আবার ত্যাগী বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হচ্ছেন।



‎স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদের ঘনিষ্ঠজন, মডেল গ্রুপের জিএম মনির হোসেন সরদার ওরফে ‘মডেল মনির’র আশ্রয়-প্রশ্রয়েই এসব নেতাকর্মী পুনর্বাসিত হচ্ছেন। তার ছত্রছায়া পেয়ে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দোসররা বিএনপির রাজনীতিতে জায়গা করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।



‎জানা গেছে, বন্দরের মো. রিপন ও আব্দুর রহমান ছিলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন—ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার আসামি ও সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর ঘনিষ্ঠ ঠিকাদার। রুবেল ছিলেন জাতীয় পার্টির নেতা মাকসুদ হোসেনের মুছাপুর ইউনিয়ন নির্বাচনের সমন্বয়ক। আর আল-আমিন ছিলেন আলোচিত সাত খুন মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নুর হোসেনের ভাই কাউন্সিলর নূর উদ্দিন এবং কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলের ঘনিষ্ঠ ড্রাইভার। তাদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। সাম্প্রতিক বেশ কিছু কর্মসূচিতেও তাদের একসঙ্গে দেখা গেছে—যা স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।



‎বিএনপির ত্যাগী নেতারা বলছেন, গত ১৭ বছর ধরে তারা হামলা-মামলা, জেল-জুলুম, নির্যাতন ও বাধা মোকাবিলা করে দলের রাজনীতি ধরে রেখেছেন। এমনকি ৫ আগস্ট দুপুর পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ও বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসর জাতীয় পার্টির কর্মীরা। অথচ বর্তমানে সেই একই ব্যক্তিরা বিএনপির প্রচারণায় প্রথম সারিতে অবস্থান করছেন।


‎তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবি—তাৎক্ষণিকভাবে এসব আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দোসরদের আশ্রয়-প্রশ্রয় বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙে পড়বে এবং সাংগঠনিক ক্ষতি হতে পারে।

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ