নারায়ণগঞ্জ মেইল : বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি বন্দর থানা বিএনপির আওতাধীন ২২, ২৩, ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার ( ১৬ মার্চ ) বাদ আছর নবীগঞ্জস্থ আল সিফাত কমিউনিটি সেন্টারে ২২, ২৩ ও ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপির যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ইফতার আগ মুহূর্তে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু এবং বিএনপির সকল নেতাকর্মীদের সুস্থতা ও দেশবাসীর মঙ্গল কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আমরা ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করছি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সব সময় নির্বাচনের পক্ষের শক্তি। আমরা নির্বাচনে যেতে চাই কিন্তু এই শেখ হাসিনার অধীনে তো আর সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। যার জন্য আমরা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনেই অংশগ্রহণ করি নাই। এবং ভবিষ্যতে আমরা অংশগ্রহণ করব না।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে গত সাত জানুয়ারি নির্বাচনে কিন্তু আমরা অংশগ্রহণ করি নাই। আর এই নির্বাচন কমিশনার অধীনেও কিন্তু আমরা কোন নির্বাচনে যাব না। আগামীতে বন্দর উপজেলার যে নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে আমরা কোন প্রার্থীর পক্ষে নাই। বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা এই নির্বাচনও বর্জন করেছি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। বিএনপি থেকে উপজেলা নির্বাচনে কোন প্রার্থী দেওয়া হয় নাই। সুতরাং কেউ যদি বিএনপির নামে ভোট চায় সে কিন্তু বিএনপি’র প্রার্থী হিসেবে গণ্য হবে না। কেউ যদি বিএনপির নামে ভোট চায় তাকে আপনারা প্রত্যাখ্যান করবেন। আর যদি বিএনপি থেকে কাউকে প্রার্থী দেওয়া হয়। তাহলে কোন বহিষ্কৃত নেতাকে প্রার্থী দেওয়া হবে না। আমাদের বন্দরেই অনেক বিএনপি’র শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছে।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন এই সরকার গত ১৬ বছর ধরে এ দেশকে লুটেপুটে খাচ্ছে। দুর্নীতির মাধ্যমে আওয়ামী লীগের এমপি মন্ত্রী থেকে শুরু করে নেতাকর্মীরাও অবৈধ টাকার পাহাড় গড়েছে। জনগণের টাকা লুটেপুটে তারা তা বিদেশেও পাচার করেছে। দেশকে একটি তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হয়েছে। আজকে তাদের লুটপাটের কারনে দেশে ডলার সংকটের কারণে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে রমজান মাসও সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আজকের যে সরকার হয়েছে এই সরকার কিন্তু জনগণের সরকার নয় এটি একটি অবৈধ সরকার। সরকার জোর করে এদেশের মানুষকে জিম্মি করে একটি পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। গত সাত জানুয়ারি নির্বাচন এদেশের মানুষসহ বিশ্বের কোন গণতান্ত্রিক শক্তি তাহা গ্রহণ করে নাই। সুতরাং অবিলম্বে আপনারা সাত জানুয়ারি নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়ার দাবি করছি।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, আওয়ামী লীগ যতবারই ক্ষমতা এসেছে লুটপাট ও দুর্নীতি করে দেশকে দুর্ভিক্ষে মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের এ লুটপাট ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে দিকে আজ তাদেরকে বারবার কারাবন্দি করে রাখা হচ্ছে। আর আমাদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমার রাজনৈতিক অভিভাবক জনাব তারেক রহমান বারবার এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামের ডাক দিচ্ছেন। এই সরকার সর্বশেষ একটি ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে মাত্র ৫% ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। সেদিন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এদেশের জনগণকে আহবান করেছিলেন যেন তারা ভোট কেন্দ্রে না যান এবং বয়কট করার জন্য। ওনার ডাকে এদেশের ৯৫% জনগণ ভোট কেন্দ্রে যায়নি। ঈদের পরে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, মৌলিক অধিকার, সংবাদপত্র স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য চূড়ান্ত আন্দোলনের ডাক দিবেন সে আন্দোলনে আমরা সবাই রাজপথে থেকে এই ফ্যাসিবাদি শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদের আদর্শের একটি ইসলামিক মূল্যবোধ সরকার গঠন করব ইনশাল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আমরা এমপি নির্বাচন বয়কট করেছে এবং আসন্ন উপজেলা নির্বাচনও বয়কট করেছে। আপনারা জানেন আমরা যখন আন্দোলন সংগ্রাম করেছি তখন কিছু কুলাঙ্গার দ্বারা বিএনপির লেবাসধারী তারা সরকারি দলের এমপিদের সাথে হাত মিলিয়ে তাদের নির্বাচন করেছিল। সেদিন কিন্তু আমাদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এর নির্দেশে ওই কুলাঙ্গাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করেছিলেন। আজকে তারা উপজেলা নির্বাচনে গিয়ে বিএনপির পরিচয় দেয়। আমরা উপজেলা নির্বাচন বয়কট করেছি যারা উপজেলা নির্বাচনে গিয়ে বিএনপির কথা বলে ভোট চাইবেন আপনারা তাদের মুখে থুতু ও ধিক্কার দিবেন। কারণ তারা বিএনপির কেউ না তাদেরকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করে দেয়া হয়েছে। এখন তারা আবার বিএনপির নাম ভাঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান হতে চায়। তারা দলের নাম ভাঙ্গিয়ে নিজের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে চায়। আন্দোলন সংগ্রামের সময় সরকারের দিলে এমপি সাথে গিয়ে হাত মিলিয়ে বসে থাকে। মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে আমি আপনাদেরকে বলছি আপনারা উপজেলা নির্বাচনে কাউকে সমর্থন করবেন না এবং কেউ ভোটকেন্দ্রে যাবেন না।
২৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলাম বাবু’র সভাপতিত্বে ও ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ফতেহ রেজা রিপন, বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি শাহেন শাহ আহম্মেদ, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, বন্দর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক রানা, সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. এইচএম আনোয়ার প্রধান।
এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য এড. রফিক আহমেদ, শাহিন আহম্মেদ, মাকিদ মোস্তাকিম শিপলু, বন্দর থানা বিএনপি’র সাবেক আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ পনেছ, বন্দর থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির উল্লাহ টিপু, সোহেল খান বাবু, ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মনির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক হাজী জাবেদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবদুল্লাহ, ২৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজল আহম্মেদ কালুন, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. কাজী নজরুল ইসলাম, ২২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শিবু দাস, সিনিয়র সহ-সভাপতি সানোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রাসেল বেপারীসহ বন্দর থানা বিএনপি ও ওয়ার্ডের নেতৃবৃন্দ।