বিদ্রোহী মুকুলকে কড়া জবাব দিলেন সাখাওয়াত

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির বিদ্রোহী গ্রুপের নেতা আতাউর রহমান মুকুল কিছুদিন আগে এক বক্তব্যে বলেছিলেন, রিক্সাওয়ালা ঠেলাগাড়িওয়ালা দিনমজুরদের নিয়ে সভা সমাবেশ করছে মহানগর বিএনপির নেতারা। মুকুলের এই ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের কড়া জবাব দিয়েছেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। বুধবার ১৬ নভেম্বর বিকেলে বন্দরের মুসাপুর ইউনিয়নে আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে তিনি মুকুলের সেই দিনের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বলেন, এদেশের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ সব সময় আন্দোলন সংগ্রামে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে মানুষের অধিকার আদায়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এসেছে। পহেলা সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে পুলিশের নির্মম হামলায় শহীদ হয়েছেন নারায়ণগঞ্জের যুবদল নেতা শাওন। এই শাওন একজন সাধারণ শ্রমিক ছিলো। মুন্সীগঞ্জে পুলিশের হামলায় নিহত হয়েছে আর এক ছাত্রদল নেতা শাওন, সেও অটো চালক ছিলো। ভোলায় পুলিশের গুলিতে নিহত আব্দুর রহিম নুর আলম কৃষক ছিলো। এইসব সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে। তাই তারাই আমাদের আন্দোলন সংগ্রামের মহানায়ক। তাদেরকে যারা ছোট করে কথা বলে, রিক্সাওয়ালা ঠেলাগাড়িওয়ালা দিনমজুরদের নিয়ে মহানগর বিএনপি সভা সমাবেশ করছে বলে যারা বক্তব্য দেয়, তারা এসব শহীদ মহানায়কদের রক্তের সাথে বেইমানি করছে, তাদেরকে অপমান করে জাতিকে লজ্জিত করছে। আমরা আজকের এই সভা থেকে তাদেরকে ধিক্কার জানাই।

 

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ একটি অভিশপ্ত দল এই দল যখন ক্ষমতায় আসে তখন জনগণকে দুর্ভিক্ষ উপহার দেয়। হাজার ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ডাস্টবিনের কুকুর মানুষ একসাথে খাবার খেয়েছে। বাসন্তীরা লজ্জা নিবারণের জন্য জাল গায়ে পরিধান করেছে। এবারেও আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে লুটেপুটে এমন এক অবস্থা তৈরি করেছে যাতে আমরা আরেকটি দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। চারিদিকে দ্রব্যমূল্যের যেভাবে লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়েছে তাতে দেশের মানুষ তিন বেলা খেতে পারছে না। তাই আমরা দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য, দেশের মানুষকে দুর্ভিক্ষ থেকে মুক্ত করার জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ান এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছি। সে আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। দেশের মানুষকে স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি দেয়ার লক্ষ্যে আমরা সবাই সেই মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করবো। সেই সাথে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাবো ঢাকার মহাসমাবেশে যাতে দেশের সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে অংশ নিতে পারে সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ঢাকায় যেতে কাউকে যেতে বাঁধার সৃষ্টি করা না হয়।

 

মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারা মিয়ার সভাপতিত্বে এবং মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য শাহীন আহমেদ ও মহানগর যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি হারুনুর রশিদ লিটনের সঞ্চলনায় অনুুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু।

 

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনু, ফতেহ রেজা রিপন, এম এইচ মামুন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ডা. মজিবুর রহমান, বরকত উল্লাহ, হাবিবুর রহমান দুলাল, মাসুদ রানা, মাকিদ মোস্তাকিম শিপলু, কামরুল হাসান চুন্নু সাউদ, মহানগর বিএনপি নেতাও। ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহেন শাহ্, নাজমুল হক রানা, বন্দর থানা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব শাহাদুল্লাহ মুকুল, বন্দর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সম্রাট হাসান সুজনসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ