ফতুল্লাবাসীর দু:খ দেখার কেউ নেই

নারায়ণগঞ্জ মেইল: টানা বর্ষনে ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকায় জলজটে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। অথচ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অনেকটা রিলাক্স মুডে দিন কাটাচ্ছেন, এ নিয়ে যেনো কারো কোন মাথা ব্যাথাই নেই। ফতুল্লাবাসী যখন চরম ভোগান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন তখন স্থানীয় সাংসদ শামীম ওসমান নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। সাংসদ শামীম ওসমানের অনুসারিরা তাকে উন্নয়ণের রূপকার বললেও বিপরীত মন্তব্য করছেন ফতুল্লাবাসী। যাদের ভোটে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন দুর্দিনে সেই ভোটারদেরই খোঁজ খবর রাখছেন না শামীম ওসমান।

জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার অন্তর্গত ফতুল্লা থানাধীন ফতুল্লা ও কুতুবপুর ইউনিয়নবাসীর দুরবস্থা একেবারেই চরমে অথচ সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আজাদ বিশ^াসের এ বিষয়ে কোন ভ্রুক্ষেপই নেই। ফতুল্লাবাসীর খোঁজ খবর না রেখে আরাম আয়েশে দিন কাটাচ্ছেন। শুধু জলজটেই নয়, করোনা পরিস্থিতিতেও উপজেলা চেয়ারমান আজাদ বিশ্বাসকে খুঁজেই পায়নি ফতুল্লাবাসী। অথচ দীর্ঘদিন ধরে সদর উপজেলার চেয়ারম্যান পদটি দখল করে রেখেছেন তিনি। কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু ও ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লৎফর রহমান স্বপনের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। জনসাধারণের খোঁজ না রেখে নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন।

শনিবার সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরেই থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও গত বৃহস্পতিবার থেকে বষ্টির পরিমান বেড়েছে কয়েকগুন এতে করে ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকায় জলজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফতুল্লার লালপুর, ইসদাইর, মাসদাইর, দেওভোগ, শিবু মার্কেট, সস্তাপুর, হাজীগঞ্জ, কুতুবআইল, কাঠেরপুল, লামাপাড়া, লালখা, সেহাচর, তক্কারমাঠ, পিলকুনী, দাপা ইদ্রাকপুর, জোড়পুল, খা বাড়ি, খোজপাড়া, আলীগঞ্জ, কুতুবপুর, পাগলা, নয়ামাটি, রসুলপুর, নূরবাগ, মুসলিমপাড়া, এনায়েতনগর, কাশিপুর ও বক্তাবলীসহ গোটা ফতুল্লা থানা এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কোন কোন এলাকায় সড়কে নৌকা চলাচল করছে। এসব এলাকার সরু গলিসহ মূল সড়কে অবস্থিত বাসা-বাড়ির পয়নিষ্কাশনের ড্রেনগুলো আবর্জনায় আটকে গেছে। পাশাপাশি অপরিল্পিত রাস্তা-ড্রেন নিমার্ণে জলজট সৃষ্টি হচ্ছে। কোথাও হাটু আবার কোথাও হাটুর উপরে উঠেছে পানির স্তর। একই সাথে রাস্তায় জমে থাকা পানির উচ্চতা বেড়ে আবর্জনাসহ তা ঘরের ভিতরে প্রবেশ করছে। এতে করে চড়ম ভোগান্তি ও মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে এসব অঞ্চলের মানুষগুলো। ডিএনডি বাঁধের আওতাভুক্ত হওয়ায় এখানে জলাবদ্ধতার চিত্র নতুন নয়। কিন্তু টানা বর্ষনে ডিএনডিবাসীর ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলছেন, বৃষ্টির মৌসুম শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে ড্রেন সংস্কার ও পরিস্কারে অবহেলা করা হয়েছে। তাই বৃষ্টি হলে ড্রেনগুলো আটকে যায় এবং জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। সেদিকে নজর দিচ্ছেন না জনপ্রতিনিধিরা।

ফতুল্লার বাসিন্দা বাসেদ মিয়া নারায়ণগঞ্জ মেইলকে জানান, ‘বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। পানির সাথে মলমূত্র ও শিল্প-কারখানার কেমিক্যালযুক্ত বিষাক্ত পানি মিশে রাস্তা তলিয়ে ঘরে প্রবেশ করেছে। কয়েক ঘন্টার বৃষ্টিতে এই পরিনতি। বৃষ্টি আরো বেড়ে গেলে আমাদের অবস্থা আরো খারাপ হবে। কিন্তু স্থানীয় চেয়ারম্যান বা ইউপি সদস্য সেদিকে নজর দিচ্ছে না। শুকনো মৌসুমেই ড্রেনগুলো সংস্কার করা প্রয়োজন ছিলো। তাহলে এখন এতো জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতো না। বা পানি জমলেও তা দ্রুত সরে যেত। কিন্তু পানি সরছেই না।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ