নারায়ণগঞ্জ মেইল: সারাদেশে ২৭৩ টি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করলেও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে এখনও নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিএনপি। মনে করা হচ্ছে জোট প্রার্থীর জন্য আসন টি সংরক্ষিত রেখেছেন দলটি তবে বিএনপি অধ্যুষিত ফতুল্লায় ধানের শীষের প্রার্থী ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থী দেয়া হলে ভরাডুবি হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তাই এ আসনে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি তাদের। শেষ মুহূর্তের চমকের অপেক্ষায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের ভোটাররা।
জানা যায়, সারাদেশে দুই দফায় ২৭৩ টি আসনে একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনের মধ্যে চারটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনে কোন প্রার্থী ঘোষণা করেনি দলটি। সমসাময়িক রাজনীতি বিশ্লেষণে মনে হচ্ছে এই আসনটি বিএনপি তার জোটের শরিকদের জন্য সংরক্ষিত রেখেছে। সেই হিসেবে নারায়ণগঞ্জে-৪ আসনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মুফতি মনির হোসেন কাসেমীর মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এদিকে এই আসনে দলীয় মনোনয়নের জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ শাহ আলম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব ও জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি।
তবে ফতুল্লার ভোটের হিসেব নিকেশ পর্যালোচনা করে মনে হচ্ছে, এই আসনে বিএনপি তাদের দলীয় প্রার্থী না দিলে আসনটি হারাবার আশঙ্কা থেকে যায়। কারণে এই আসনে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের একজন হেভিওয়েট প্রার্থী মাওলানা আব্দুল জব্বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাছাড়া এই আসনে মুফতি মনির হোসেন কাসেমীকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হলে বিএনপির একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে একক দলীয় প্রার্থী না হলে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে জয় পাওয়াটা দুস্কর হয়ে দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ওসমান পরিবারের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জের কিং মেকার হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ আলী এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন ওসমান পরিবারের আরেক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন।
স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের আমলে গডফাদার ওসমান পরিবারের সাথে আঁতাত করে চলা এসকল বহুরূপী লোকদের নির্বাচনী মাঠে মেনে নিতে পারছেন না সাধারণ ভোটাররা। কারণ নারায়ণগঞ্জের মানুষ ওসমান পরিবারের বীভৎস রূপ দেখেছে। তারা দেখেছে খুন-গুম আর নির্যাতন। তাই ওসমান পরিবারের সাথে সম্পর্কযুক্ত কাউকে নারায়ণগঞ্জের মানুষ কখনো গ্রহণ করবে না।
নারায়ণগঞ্জের সচেতন ভোটাররা মনে করেন বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে আওয়ামী লীগকে মুছে ফেলতে হবে। সন্ত্রাসের জন্মদাতা ওসমান পরিবারকে মুছে ফেলতে হবে। তা না হলে নারায়ণগঞ্জ আবারো সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত হবে। ৫ আগস্টের পর দুর্ধর্ষ ওসমান পরিবার পালিয়ে গেলেও বিদেশে বসে বিভিন্ন নাশকতার চক্রান্ত করছে। আর এসব চক্রান্তে তাদেরকে সহায়তা করছে বাংলাদেশে থাকা ওসমান পরিবারের দোসররা। তাই এদেরকে শক্ত হাতে দমন করতে হবে। বিশেষ করে নির্বাচনী মাঠে স্বৈরাচারের কোনো দোসরকে রাখা যাবে না। কারণ এরা নির্বাচিত হয়ে এলে নারায়ণগঞ্জ আবার ওসমান পরিবারের নিয়ন্ত্রনে চলে যাবে। যা কোনদিনও হতে দেয়া যাবে না।
