কাসেমীকে প্রত্যাখ্যান, বিএনপি’র প্রার্থী চায় ফতুল্লার তৃণমূল

নারায়ণগঞ্জ মেইল: সারাদেশে ২৩৭ টি আসনে একর প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনের মধ্যে চারটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনে কোন প্রার্থী ঘোষণা করেনি দলটি। সমসাময়িক রাজনীতি বিশ্লেষণে মনে হচ্ছে এই আসনটি বিএনপি তার জোটের শরীরদের জন্য সংরক্ষিত রেখেছে। সেই হিসেবে নারায়ণগঞ্জে-৪ আসনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মুফতি মনির হোসেন কাসেমীর মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

তবে ফতুল্লার ভোটের হিসেব নিকেশ পর্যালোচনা করে মনে হচ্ছে, এই আসনে বিএনপি তাদের দলীয় প্রার্থী না দিলে আসনটি হারাবার আশঙ্কা থেকে যায়। কারণে এই আসনে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের একজন হেভিওয়েট প্রার্থী মাওলানা আব্দুল জব্বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাছাড়া এই আসনে মুফূ মনির হোসেন কাসেমীকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হলে বিএনপির একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে একক দলীয় প্রার্থী না হলে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে জয় পাওয়াটা দুস্কর হয়ে দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

ঘটনা বিশ্লেষণে জানা যায়, জমিয়ত নেতা মুফতি মনির হোসেন কাসেমীর ব্যক্তি জনপ্রিয়তা নেই বললেই চলে। ফতুল্লার সাধারণ ভোটাররা তার পাশে নেই, এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে।। ফতুল্লাবাসী মনির হোসেন কাসেমীকে রীতিমতো প্রত্যাখ্যান করেছে। কাশেমীর ডাকে সাড়া দেয়নি ফতুল্লার মানুষ। গত শনিবার ১ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের জনসভায়। বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা সালাউদ্দিন আহমেদকে এনেও দর্শক টানতে পারেননি কাসেমী। সুপারফ্লপ হয়েছে তার “আজমতে সাহাবা” নামক নির্বাচনী শোডাউন।

সূত্র বলছে, বাংলাদেশে চলছে নির্বাচনী মৌসুম, চারিদিকে নির্বাচনে হাওয়া। এবারের নির্বাচনী সীমানা বিন্যাসে নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন নারায়ণগঞ্জ-৪ গঠিত হয়েছে ফতুল্লা থানার পাঁচটি ইউনিয়ন এবং সদর থানার অন্তর্গত আলীরটেক ও গোগনগর ইউনিয়ন নিয়ে। ফতুল্লা চিরকালীনই বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ২০১৮ সালে বিএনপি দলীয় প্রতীক ধানের শীষের মনোনয়ন দেয়া হয় জোটের শরীক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মুফতি মনির হোসেন কাসেমীকে।

মনোনয়ন পাওয়ার পরে কাসেমীর সার্বক্ষণিক সঙ্গি হিসেবে দেখা যায় নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বিতর্কিত চরিত্র হেফাজত নেতা মাওলানা ফেরদৌসুর রহমানকে। এই ফেরদাউস নারায়ণগঞ্জের গডফাদার ওসমান পরিবারের দোসর হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত হলেও তাকে নিয়েই নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেন ধানের শীষের কান্ডারী মনির হোসেন কাসেমী। যার ফলে বিএনপির নিবেদিত প্রাণ নেতাকর্মীর অর্ধেক তার কাছ থেকে ছুটে যায়। নির্বাচনের আগে তার নির্বাচনী প্রচারণায় কখনো মনে হয়নি তিনি জয়ের জন্য মাঠে নেমেছেন বরং তাকে দেখে মনে হয়েছে ওসমান পরিবারের নির্দেশনায় তিনি নির্বাচনের অভিনয় করছেন। নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে তিনি অসুস্থতার ভান করে হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হন এবং নির্বাচনী মাঠ ফাঁকা করে শামীম ওসমানকে ছেড়ে দেন। সেই সময় বিএনপি’র কোনো নেতাকর্মীদের সাথে আর যোগাযোগ রাখেননি তিনি।

কাসেমীর সেই ড্যামি নির্বাচনের কথা এখনো ভুলে যায়নি ফতুল্লার মানুষ। তাই কাসেমীকে প্রার্থী হিসেবে তারা মেনে নিতে পারেননি যার প্রমাণ মিলেছে গত শনিবার কেন্দ্রীয় ঈদগাহের জনসভায় কাসেমীর পক্ষে তেমন কোন নেতাকর্মী সেদিন মাঠে উপস্থিত ছিলেন না। যা কিছু লোক দেখা গেছে তা সব বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এতে বোঝা যায় কাসেমী জনসমর্থনহীন, ফতুল্লার মানুষ এমপি প্রার্থী হিসেবে কাসেমীকে চায়না।

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ