নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, গত ১৬ বছরে স্বৈরাচারী সরকারের জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছে সবচেয়ে বেশি বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ এবং তার পেটুয়া বাহিনীর সীমাহীন জুলুম, নির্যাতন, হামলা, মামলা সহ্য করেও বিএনপির নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়নি। বুক ফুলিয়ে লড়াই করেছে। যারা নেতাকর্মীদের ফেলে পালিয়ে যায় তারা হচ্ছে ভীরু কাপুরুষ। আওয়ামীলীগ রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে পালায়নি, তারা চুরি করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র আওতাধীন ফতুল্লা থানা বিএনপির অন্তর্গত কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সোমবার (৭ জুলাই) বিকেলে কাশিপুরের হাটখোলা মাঠে এই আয়োজন করা হয়।
গিয়াসউদ্দিন বলেন, খুনি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জের একজন গডফাদারকে স্নেহ করতেন ভালবাসতেন। সেই গডফাদারের ছিল সন্ত্রাসী বাহিনী। নারায়ণগঞ্জ-৪, নারায়ণগঞ্জ-৫ ও নারায়ণগঞ্জ-৩ এই তিনটি আসনে এই সন্ত্রাসী গডফাদারের নেতৃত্বে দখল আর চাঁদাবাজি চলতো। বাকি দুইটি আসনে ছিলো স্থানীয় এমপিদের সন্ত্রাসী বাহিনী।
নারায়ণগঞ্জের সেই খুনি গডফাদার ছিলো একজন চাপাবাজ মিথ্যাবাদী। মুখে বড় বড় কথা বলতো কিন্তু প্রতিবার নেতাকর্মীদের ফেলে সে পালিয়ে যায়। তার সন্ত্রাসী বাহিনী নারায়ণগঞ্জে চাঁদাবাজি লুটপাট করে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছিলো। নারায়ণগঞ্জকে ধ্বংস করার নেপথ্যে সেই একটি পরিবার। সেই পরিবার হচ্ছে জোহা পরিবার।
তিনি বলেন, ১৬ বছরের দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর সেই খুনি স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ পালিয়ে গেছে কিন্তু পালিয়ে যাওয়ার আগে তারা এই দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। এখন আমাদেরকে সেই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে দেশটাকে পুনর্গঠন করতে হবে। সমাজের ভালো মানুষ গুলোকে সামনের সারিতে নিয়ে আসতে হবে। মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন, স্কুল কলেজ মাদ্রাসার শিক্ষক, কৃষক, শ্রমিক, রিক্সাওয়ালা, দিনমজুর, ছোটখাটো চাকরিজীবী যারা সৎ পথে জীবন যাপন করেন তাদেরকে মূল্যায়ন করতে হবে। ভালো মানুষদের সম্মানিত জায়গায় বসাতে হবে আর খারাপ মানুষদেরকে বিতারিত করতে হবে।
স্থানীয় বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে গিয়াসউদ্দিন বলেন, বিএনপি সারাদেশে সদস্য সংগ্রহ এবং নবায়ন কর্মসূচি পালন করছে। এখন সবাই বিএনপি’র সদস্য হতে উদগ্রীব হয়ে আছে। আপনারা সবাইকে বিএনপির সদস্য করবেন কিন্তু তার আগে জেনে নেবেন সে কেমন মানুষ। যদি সে ভালো মানুষ হয় তাহলে তাকে সদস্য করবেন। কেউ যাতে বিএনপির সদস্য হতে এসে ফিরে না যায় তবে কোনো খারাপ মানুষকে সদস্য করবেন না।
কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মাইনুল ইসলাম রতনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আরিফ মন্ডলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সহ-সভাপতি সুলতান উদ্দিন মোল্লা, সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ সভাপতি জিএম সাদরিল, আসলাম হোসেন, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেকসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।