নারায়ণগঞ্জ মেইল: ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে থেকে শুরু হলো শারদীয় দুর্গাপূজা। বুধবার সন্ধ্যায় বোধনের মধ্য দিয়ে দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য বন্দনাপূজা করা হয়। বোধন দুর্গাপূজার অন্যতম আচার।
শরৎকালের দুর্গাপূজায় বোধনের বিধান রয়েছে। বোধন শব্দের অর্থ জাগরণ বা চৈতন্যপ্রাপ্ত। পূজা শুরুর আগে বেলশাখায় দেবীর বোধন দুর্গাপূজার অত্যাবশ্যকীয় অঙ্গ। পুরাণ অনুসারে, রাক্ষসরাজ রাবণকে বধের উদ্দেশ্যে ভগবান রামচন্দ্র শরৎকালে দুর্গাপূজা করেন। অকালে দেবীকে তিনি বোধন করেন বলে একে অকালবোধনও বলা হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন বলেন, করোনার সময়ে যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং শাস্ত্রমতে যা যা বলা হয়েছে তা করা হবে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে এবার কুমারী পূজা হবে না। থাকছে না বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজনও। করোনার কারণে নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিমা বিসর্জনে শোভাযাত্রা পরিহার করা হবে। এবারে পূজা হবে কিন্তু কোন উৎসব হবে না। স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়িয়ে যতটা সম্ভব সাবধানতার সাথে এবার পূজা পালন করতে হবে। সরকার নির্দেশিত ২৬ দফা ও ৭ দফা নির্দেশনা মেনে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার ষষ্ঠী তিথিতে দেবী দুর্গার আমন্ত্রণের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজা শুরু হবে। সোমবার প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে এ পূজা শেষ হবে। এবার দেবী দুর্গা দোলায় চড়ে আসবেন, যাবেন গজে চড়ে। বিশ্ববাসীর করোনামুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সপ্তমী তিথিতে প্রার্থনা করা হবে। এবার নারায়ণগঞ্জে ১৯৯টি মন্ডপে দূর্গ পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে সারা দেশের পূজামণ্ডপগুলোতে ‘সন্ধ্যারতির’ পর মন্দির ও মণ্ডপ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা জানানো হয়। মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি ‘শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২০’ সভার আয়োজন করে।
সভায় জানানো হয়, এ বছর দুর্গাপূজা শুরু হবে ২১ অক্টোবর দেবী দুর্গার আগমনের মাধমে। মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে ২২ অক্টোবর ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে। শেষ হবে ২৬ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে। এর মাঝে সপ্তমীর দিনে করোনা মুক্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনা করা হবে। এই সাত দিনে সন্ধ্যারতির পর সারা দেশের পূজা মণ্ডপগুলো বন্ধ থাকবে। দেবী দুর্গার ভোগ প্রসাদ ব্যতীত এবার খিচুড়ি বা এই জাতীয় প্রসাদ বিতরণ এবং বিজয়ার শোভাযাত্রা হবে না। তবে প্রতি মণ্ডপ থেকে নিজ নিজ বিসর্জন ঘাটে গিয়ে দেওয়া যাবে।
সন্ধ্যারতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যারতি মানে হচ্ছে সন্ধ্যার পর পুরোহিত ধূপ, শঙ্খ, পাখা দিয়ে আরতি দেন। এটি সাধারণত সন্ধ্যা ৬টার দিকে দেওয়া হয়। এটি দিতে ২০ থেকে ২৫ মিনিট লাগে। এই সন্ধ্যারতি শুরুর পর থেকেই মন্দির বা পূজামণ্ডপে সর্বসাধারণকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। মণ্ডপে তখন শুধু মন্দির বা মণ্ডপের কর্মীরা থাকবেন।