নারায়ণগঞ্জ মেইল: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবথেকে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপুজোর বাকি আর মাত্র দুই মাস। নারায়ণগঞ্জে প্রতি বছরই অত্যান্ত উৎসবমূখর পরিবেশে উদযাপন হয়ে থাকে দূর্গাপূজো। অন্যান্য বছর এ সময়ে শুরু হয়ে যায় পুজোর প্রস্তুতি কিন্তু এবার করোনা ভাইরাসের কারনে ঠিক সেভাবে দেখা মিলছে না প্রতিমা শিল্পিদের হাঁকডাক, নেই আগের সেই ব্যস্ততা। বিশ্বব্যাপী মহামারি রূপ নেয়া কোভিড-১৯ এর কারনে এবার পূজা আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তার দোলাচলে রয়েছেন আয়োজকরা। করোনা ভাইরাসের কারনে এবছর মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দের পূণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হয়নি, জগন্নাথ দেবের রথ যাত্রা ও ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জন্মাষ্টমীও কোন প্রকার আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া শুধুমাত্র ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হয়েছে। কিন্তু শারদীয় দূর্গাপূজো হচ্ছে হিন্দুদের সারা বছরের প্রধাণ উৎসব। এ পূজো শুধু মাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানই নয়, বরং অনেকের জীবন জীবীকার উৎসও।
শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষে বহু অর্থের লেনদেন হয় প্রাচ্যের ডান্ডি নারায়ণগঞ্জে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের হিন্দু ব্যবসায়ীরা পূজো আয়োজনে দুহাতে টাকা খরচ করেন, আর এতে করে বহু মানুষের সারা বছরের খোরাক উঠে আসে এই সুবাদে। যাঁরা প্রতিমা গড়েন, যাঁরা মণ্ডপ গড়েন, যাঁরা মূর্তির সাজপোশাক তৈরি করেন, যাঁরা আলোকসজ্জার কাজ করেন, যারা ঢোল বাজান এরকম বহু পেশা আর ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মানুষজন তাকিয়ে থাকেন এই উৎসবের দিকে। করোনার আবহে এই বছর পুজো হবে কি না, সে নিয়ে একটা প্রশ্নচিহ্ন এখনও ঝুলছে। যেহেতু উৎসব মানেই জনসমাগম এবং একসঙ্গে অনেক লোক মানেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা।
কিন্তু জানা গেছে, সরকারও চাইছে এবছর পুজো যেন বন্ধ না হয়। না হলে বহু লোকের জীবন–জীবিকা সংকটে পড়বে। কাজেই বেশ কিছু নিয়ন্ত্রণ এবং বিধি-নিষেধ আরোপ করে পুজোর অনুমতি দেওয়ার কথা প্রশাসনও ভাবছে। মানুষের ভাবাবেগের কথাও মাথায় রাখছে সরকার। আয়োজন, আড়ম্বর, সবই এবছর কম হবে। হয়ত কিছুটা নিয়মরক্ষার খাতিরে হবে, কিন্তু পুজো বন্ধ হবে না। নিয়ম-কানুন আসবে। হয়ত দর্শনার্থী ঢুকতেই দিলো না। বা এরকম হয়ত কিছু হবে। সেক্ষেত্রে পুজো তো বন্ধ করা যায় না, পুজো হবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধাণ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গোৎসব পালিত হবে তবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে সীমিত পরিসরে। ভাইরাসের সংক্রমন রোধে লোক সমাগম এবং বাদ্য বাজনা বন্ধ রেখে ধর্মীয় অচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এবারের দূর্গা পূজো পালন করা হবে। এবারে পূজো আয়োজনের জন্যে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক সকল মন্দির ও মন্ডপ কমিটির প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরা মত বিনিময় সভার আয়োজন করবো। সকলের মতামত নিয়ে এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে কিভাবে সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে পূজা আয়োজন করা যায় সে বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হবে সেই সভায়।