নারায়ণগঞ্জ মেইল: বিগত দিনের তুলনায় বর্তমানে কোন প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই নারায়ণগঞ্জে পুলিশী সেবা পাচ্ছে সাধারণ মানুষ। ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার’ মূল প্রতিপাদ্য ধারণ করে সারাধণ মানুষের সেবা নিশ্চিত করছে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ। বিগত দিনে থানাতে অভিযোগ, সাধারণ ডায়েরী, মামলা দায়েরসহ পুলিশের বেসা নিতে হতে টাকা খরচ করতে হত। পাশাপাশি পুলিশের গ্রেফতার বানিজ্যেও আতংকিত ছিল সাধারণ মানুষ। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে জায়েদুল আলম যোগদানের পরই পাল্টে গেছে সেই চিরচেনা চিত্র। নারায়ণগঞ্জে প্রায় ৯৮ শতাংশ গ্রেফতার বানিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও পুলিশী সেবা নিতে এখন আর টাকা খরচ করতে হয় না। মূলত জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে জায়েদুল আলম যোগদানের পর পরই জেলা পুলিশের বিতর্কিত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। বর্তমানে ফতুল্লা, সদর, আড়াইহাজার, সোনারগাঁ ও রূপগঞ্জ থানায় কোন প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই পুলিশী সেবা পাওয়া গেলেও সেবার নামে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় বন্দর থানায় সেবা নিতে। সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষদের সাথে খারাপ আচারণসহ নিজ ইচ্ছে মত আইন তৈরী করে সেবার নামে ভোগান্তি সৃষ্টি করছেন বলে বন্দর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফখরুদ্দিন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও বন্দর থানায় ফখরুদ্দিন ভূইয়া যোগদানের পর থেকেই আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিত চরম অবনতি হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি সরজমিনে গিয়ে সেই প্রমাণও পাওয়া গেছে। সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষের সাথে খারাপ আচারণ করাসহ ব্যতিক্রম নিয়মে চলে বন্দর থানা। জানাগেছে, বিভিন্ন থানা এমনকি এসপি অফিসে কেউ কোন অভিযোগ দিলে তার একটি রিসিভ কপি দেয়া হয় বাদীকে। বাদীর কপিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সীল থাকে। এছাড়াও থানাতে অভিযোগ করতে বাদীর কপিতে অভিযোগ নাম্বার দেয়া হয়। কিন্তু বন্দর থানায় বাদীকে কোন কপি দেয়া হয় না। তাই অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ রেজিস্টার খাতায় রেকর্ড না রেখে কৌশলে এরিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সম্প্রতি এক রাতে বন্দরের কলাগাছিয়া এলাকার জাপান প্রবাসী ইয়াসীন আরাফতের স্ত্রী মনিকাকে তারই মামা শ^শুর শাহবুদ্দিন (পুলিশের এসবিতে কর্মরত) সেক্সচুয়াল হেরেজমেন্ট করেন। বিষয়টি প্রতিবাদ করায় মনিকাকে বেদম মারধর করে ঘরে বন্দি করে রাখে শাহবুদ্দিন। পরে মনিকা ফোনে যোগাযোগ করলে তার বাবা মনির হোসেন ছুটে আসেন। পরে মনির হোসেনকেও মারধর করে শাহবুদ্দিন। এসময় মারধরের ঘটনা ভিডিও করায় শ^শুর আক্তার হোসেন, শ^শরি, নিলুফা ও ননদ পপি আক্তার ক্ষিপ্ত হয়ে মনিকাকে মারধর করে। পরে মনিকা ও তার বাবাকে ঘরে বন্দি করে নির্যাতন চালায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মনিকা ও তার বাবাকে উদ্ধার করে বন্দর থানা পুলিশ। পরে রাতেই মনিকা বন্দর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে নারায়ণগঞ্জ জেনালেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। রাতে অভিযোগ দায়ের সময় কম্পিউটার অপরেটার ও ডিউটি অফিসার অভিযোগের রিসিভ কপি দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। সকালে মনিকা ও তার পরিবার ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা ফখরুদ্দিন ভূঁইয়ার সাথে দেখা করলে তিনি মামলা নেয়া যাবে না বলে জানান। একই সাথে কোর্টে মামলা করার পরামর্শ দেন। পরে অভিযোগের কপি চাইলে তাও দিতে তিনি অস্বীকার করেন। এব্যাপারে বন্দর ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা ফখরুদ্দিন ভূঁইয়া জানান, সাধারণ ডায়েরী করা হলে বাদীকে কপি দেয়া হয়। অভিযোগ করলে কোন কপি দেয়া হয় না।