নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জের বিসিকের ঝুট সেক্টর একক নিয়ন্ত্রনে ছিল ওসমান পরিবার। বিশেষ করে আজমেরী ওসমান ও অয়ন ওসমানের লোক দিয়েই বিসিকের ঝুট নিয়ন্ত্রন করে মাসে আয় করছেন কোটি কোটি টাকা। গার্মেন্টস মালিকদের নাম মাত্র মূল্য দিয়ে ক্রয় করা হত ঝুট। তবে গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর ওসমান পরিবার পালিয়ে গেলে ঝুটের নিয়ন্ত্রন নেন বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। যিনি সেলিম ওসমানের কমিটিতে নির্বাহী সভাপতি ছিলেন।
বিসিকের শিল্প-কারখানাগুলোর ঝুট সেক্টরসহ সুতার কোন, কার্টুনসহ বিভিন্ন ওয়েস্টেজ পণ্যের ব্যবসা এখন হাতেমের নিয়ন্ত্রনে। এনিয়ে ফতুল্লার বিএনপি নেতারা বিরোধীতা করলে তাদের কয়েকটি গার্মেন্টেসের ঝুটের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন হাতেম। বিসিকের গার্মেন্টস মালিকদের মধ্য একমাত্র হাতেমই ঝুট ব্যবসার সাথে জড়িত। অনেকে তাকে ‘ঝুট বাবা’ বলেও ডাকেন। এছাড়াও মোহাম্মদ হাতেমের পক্ষে গার্মেন্টস মালিকদের ম্যানেজ করে তারই ভাতিজা আদিল হাসান সাজিদ ঝুট বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক, কৃষকদল, ছাত্রদল নেতাদের ভাগ করে দিচ্ছেন। হাতেমের এই ভাতিজা সাজিদ আজমেরী ওসমানের ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ আজমেরী ওসমানের মাদক ব্যবসায়ীদের পুরোপুরি শেল্টার দিতো দিতো।
অভিযোগে রয়েছে, হাতেমের মাধ্যমে বিসিকের ঝুটের ভাগ এখনো পাচ্ছে ওসমান পরিবার। শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান, আজমেরী ওসমান ও অয়ন ওসমানের অনুসারিরা হাতেমের মাধ্যমে ঝুট ব্যবসা করছেন। বিসিক শিল্পাঞ্চলে গার্মেন্টেসের ঝুট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একাধিক গ্রুপ এখনো মুখোমুখি অবন্থানে থাকায় যে কোনো সময়ে ঝুট নামানোকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন কারখানা মালিকরা। সাবেক ক্ষমতাসীন দলের একাধিক গ্রুপ ঝুট ব্যবসার একক নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা শুরু করলে একাধিক দল-উপদলের সৃষ্টি হলে পরবর্তীতে কয়েকভাগে ওসমান পরিবারের একক নিয়ন্ত্রণে যায় ঝুট ব্যবসা।
জানাগেছে, বিসিক নিয়ন্ত্রনে রাখতে বিএকএমইএ’র সভাপতি হয়েছেন মোহাম্মদ হাতেম। গত ১০ মে বিকেএমইএ’র মোহাম্মদ হাতেমের নেতৃত্বে ৩৫ জনের প্যানেলের ২০ জনই ছিলেন সেলিম ওসমানের প্যানেলের। সরকার পতনের পরও গোটা ফতুল্লায় ঝুট ব্যবসার প্রচ্ছন্ন নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করেন হাতেম। ফ্যাসিস্টদের বিদায়ের পর বিকেএমইএতে ওসমানদের ছায়া হিসেবে মোহাম্মদ হাতেম এখনো তাদের নির্দেশনায় কাজ করছেন বলে অভিযোগ সর্বমহলে।
গণহত্যার উস্কানী দাতা হাতেম আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পরও ওসমান পরিবারের হতে কাজ করছে নারায়ণগঞ্জে। একের পর এক বিতর্কের পরও থেমে নেই হাতেমের দাপট। সর্বশেষ একটি অনলাইন নিউজ পোর্টলের ১৪ বছর পদার্পন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে হাতেম মঞ্চে উপস্থিত থাকায় সম্মাননা নেয়নি নারায়ণগঞ্জ টুডে’র সম্পাদক সীমান্ত প্রধান। মঞ্চে জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকলেও হাতেম ইস্যুতে তারা ছিলেন নিশ্চুপ।