মাসে দেড় কোটি টাকার ‘অটো’ চাঁদাবাজি

নারায়ণগঞ্জ মেইল: শহরের প্রধান সড়কে ব্যাটারি চালিত রিক্সা, মিশুক ও ইজিবাইক প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়াসহ গুরুত্বপূর্ন সড়কগুলোতে নিয়মিত চলাচল করছে। বঙ্গবন্ধু সড়ক, পঞ্চবটি থেকে চাষাড়া ও সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে চাষাড়া পর্যন্ত নিয়মিত চলাচল করছে ইজিবাইক। তবে এই নিষিদ্ধ যান শহরে চালাচলকে কেন্দ্র করে মোটা অংকের চাঁদাবাজীর অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিন ধরেই। যার ফলে শহরের যানজটের অন্যমত কারণ এই যান অবাধে চলাচল করছে দাপটের সাথে।


অনুসন্ধানে জানাগেছে, ২০১৩ সালে বঙ্গবন্ধু সড়ক, খানপুর হাসপাতাল পর্যন্ত ও অট্টো অফিসের পর সড়কে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিলেন মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী। এরপর থেকে অনেকটা লুকিয়ে শহরে প্রবেশ করতে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক। ২০১৯ সাল থেকে শহরে ইজিবাইক প্রবেশ করলে তা আটক করে রেকার বিল বাবদ ১৫০০ করে টাকা আদায় শুরু করে জেলার ট্রাফিক পুলিশ। এতে চালকরা অনেকটা অস্বস্তিতে পড়েন।


২০২১ সালে ট্রাফিক পুলিশের অসাধু সদস্যরা ১৫শ টাকা মাসিক চুক্তিতে বিশেষ এক কার্ড ও চাবির রিং বিতরণ করেন। এই কার্ড বা চাবির রিং চালকদের কাছে থাকলে তা আটক করতো না ট্রাফিক পুলিশ। পরবর্তিতে ট্রাফিক পুলিশের অসাধু সদস্যদের যোগ দেন কতিপয় কিছু নামধারী সাংবাদিক। অসাধু ট্রাফিক পুলিশ ও কতিপয় সাংবাদিকদের সমন্বয়ে গড়ে উঠে শক্তিশালী চাঁদাবাজী সিন্ডিকেট।


বর্তমানে শহরে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার ব্যাটারি চালিত যান নিয়মিত চলাচল করছে। প্রতি গাড়ি থেকে ১৫শ টাকা হারে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে যা প্রায় মাসে দেড় থেকে দুই কোটি টাকার মত। এই সিন্ডিকেটে নামধারী সাংবাদিক থেকে শুরু করে সিনিয়র কিছু সাংবাদিকেরও নাম উঠে এসেছে।


সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়ক, দুই নম্বর রেলগেট, চাষাঢ়া চত্বরজুড়ে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে ইজিবাইকের কারণে। গ্রিন সুপার মার্কেট, সোনার বাংলা মার্কেটের সামনের বঙ্গবন্ধু সড়কে গড়ে উঠেছে অবৈধ ইজিবাইক স্ট্যান্ড। সড়কের মাঝ থেকেই উঠানো হচ্ছে যাত্রী।


নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে নগরীতে অবৈধ ইজিবাইকের কারণে যানজট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি কতিপয় অনলাইন ও পত্রিকার স্টিকার ব্যবহার করে ইজিবাইক চলাচলের বিষয়টিও উল্লেখ করেন।


এনিয়ে সাংবাদিক নেতারাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে রহস্যজনক কারণে অনেকটা নিশ্চুপ ভূমিকায় রয়েছেন জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাগণ।


এব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) রুহুল আমিন সাগরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভি করেনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ