নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন আগামী ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর সমিতির জরুরি সাধারণ সভা ডেকে সর্বসম্মতিক্রমে মধ্যবর্তী নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয় কিন্তু অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির ও অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি প্যানেল ছাড়া আর কেউ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা না দেয়ায় সেই প্যানেলটি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় লাভ করে। গত ৭ আগস্ট বার্ষিক সাধারণ সভায় মাধ্যমে শেষ হয় হুমায়ুন-আনোয়ার প্যানেলের এক বছর।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতিতে যে বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছিল তা দূর করে আইনজীবীদের মাঝে সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনাটাই প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল হুমায়ুন-আনোয়ার প্যানেলের জন্য এবং তারা সফলভাবে সেই চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করেছেন। তাই প্রথম বছরেই সাধারণ আইনজীবীদের মন জয় করতে পেরেছেন এই প্যানেলের দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, স্বৈরাচারী যুগে নারায়ণগঞ্জ আদালত পাড়ায় একক আধিপত্য বিস্তারের লোভে আওয়ামী লীগ পন্থী আইনজীবীরা যে বৈষম্যের সৃষ্টি করেছিলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থাকে পেশি শক্তি দিয়ে ধ্বংস করেছিলেন, সেখান থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে সাধারণ আইনজীবীদের মাঝে কাজের সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনা খুবই দুঃসাধ্য কাজ ছিলো। এডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির এবং এডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে কমিটির লোকজন আপ্রাণ চেষ্টা করে তা সফল করেন।
বিশেষ করে আওয়ামী লীগ পন্থী যেসব আইনজীবীরা কোনো জোর জুলুম সন্ত্রাসীতে লিপ্ত ছিল না, তাদেরকে আদালতে পেশাগত দায়িত্ব পালনের পরিবেশ সৃষ্টি করে দেন তারা। শীর্ষ কয়েকজন আওয়ামী লীগের আইনজীবী আসতে না পারলেও বাকিরা সবাই নিয়মিত আদালত করছেন। কেউ তাদেরকে কোন প্রকার হেনস্থার শিকার হচ্ছেন না। এমনকি আওয়ামী লীগ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক থাকা এডভোকেট মাহবুবুর রহমানও নিয়মিত আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন, কেউ বাঁধা দিচ্ছে না। সকল দল মতের আইনজীবীরা একটি পরিবার মত তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন। বৈষম্য দূর করে সকলকে এক সুতায় গাঁথার পুরো কৃতিত্বটাই হুমায়ূন-আনোয়ার প্যানেলের।
আওয়ামীলীগের আইনজীবীদের উপর প্রচুর ক্রোধ আর ঘৃনা জন্মেছিলো সাধারণ আইনজীবীদের। এই ক্রোধ থেকে কোনো প্রকার মব সৃষ্টি করে কোনো আইনজীবীকে হেনস্থা হতে দেননি তারা। তাদের এক বছরের চেষ্টায় প্রতিহিংসার রাজনীতি নারায়ণগঞ্জের আদালতপাড়া থেকে চিরতরে বিদায় নিয়েছে।