নারায়ণগঞ্জ মেইল: বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান এম কে খায়রুল বাশার বাহারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার (১৪ জুলাই) তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদিন খান।
অসীম উদ্দিন বলেন, ‘মানিলন্ডারিং মামলায় বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান লায়ন এম. কে খায়রুল বাশারকে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম টিম গ্রেপ্তার করে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
জানা যায়, ২০২৪ বছরের ১৭ অক্টোবর ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান খায়রুল বাশার বাহার এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তাদের শাস্তির দাবি জানান ভুক্তভোগী অনেক শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে রুমন আলী লস্কর নামের একজন শিক্ষার্থী এক লিখিত বক্তব্যে জানায়, ‘বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডা, আমেরিকা অস্ট্রেলিয়া এবং পৃথিবীর উন্নত দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রলোভনে ফেলে আমাদের থেকে টাকা গ্রহণ করে। কলেজে সেশন ফি বাবদ যে টাকা দেওয়া হয়, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে ওই কলেজের সেশন ফি প্রদান করতে হয়। কিন্তু সেটি তারা না করে মানি লন্ডারিং আইন-বহির্ভূত কাজ করেছেন।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে গ্রহণ করে সেই টাকা আমাদের থেকে নিয়ে তারা আত্মসাৎ করেছে। মূলত: সেই কলেজের টাকা স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠানোর নিয়ম থাকার পরও সেটি তারা না করে বিদেশি কলেজগুলোর ভুয়া অফার লেটার তৈরি করে। আর ওই টাকা না পাঠিয়ে আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমাদের মতো ভুক্তভোগীর সংখ্যা প্রায় সহস্রাধিক ও প্রত্যেকের পাওনা টাকার পরিমাণ গড়ে ২০ লাখ টাকা করে। বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের দেওয়া লিস্ট অনুযায়ী ৮৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন। তবে আমাদের ধারণা, এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর ২০০ কোটি টাকা তারা আত্মসাৎ করেছে এই প্রতারক।’
ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী আরো জানান, গত আগস্টের ২৭ তারিখে বিএসবি চেয়ারম্যান বাশার ও পাওনাদারদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে স্ট্যাম্প পেপারে চুক্তি সই করে যে, পাওনা টাকা ৩ কিস্তিতে যথাক্রমে ২৩ সেপ্টেম্বর, ২২ অক্টোবর ও ২৫ নভেম্বরে সবাইকে পরিশোধ করবেন। কিন্তু প্রথম কিস্তি পরিশোধের দিন (২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪) অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হয় ও তার গুণ্ডাবাহিনী দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়। সেখানে অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়, যা গুলশান থানা পুলিশকে অবগত করা আছে।
উল্লেখ্য, এম কে খায়রুল বাশার বাহারের বিরুদ্ধে উল্লেখিত প্রতারণা ছাড়াও নানা অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অপরাধ সাম্রাজ্য গড়ে তোলে শিক্ষার নামে অপরাধ ও প্রতারণা চালাতো। এম কে খায়রুল বাশার বাহার তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে।