নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জের স্কুল ছাত্রী কিশোরী জিসা মনি অপহরণ মামলায় নানা নাটকীয় ঘটনায় এবার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জান ও মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আবদুল হাইকে আদালতে তলব করা হয়েছে। ২৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টায় নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালত এ আদেশ দেন ৷ পাশাপাশি আগামী সোমবার এই মামলায় গ্রেফতার ৪ আসামির একত্রে জামিন ও রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাওসার আলমের আদালত৷
জিসা মনি বেঁচে থাকলেও তিন আসামি কেন ধর্ষণের পর হত্যা করে মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে, তার ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত। আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে মামলার এজাহার ও জবানবন্দির নথিপত্রসহ তাদের সশরীরে উপস্থিত হয়ে এর ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
আদালত জানায়, ভিকটিম যেহেতু বেঁচে আছে সুতরাং হত্যার বিষয়টি মিথ্যা। তাছাড়া ধর্ষণের বিষয়টিও নিশ্চিত নয়। আসামিরা কেন হত্যা ও ধর্ষণের জবানবন্দি দিয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে আগামী দুই কার্য দিবসের মধ্যে সদর মডেল থানার ওসি আসাদুজ্জামান এবং তদন্ত কর্মকর্তা এস আই শামীম আল মামুনকে নির্দেশ দেয়া হলো।
আগামী সোমবার চার আসামিকে একত্রে আদালতে উপস্থিত করে রিমান্ড ও জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। আসামিরা যদি আবারও জবানবন্দি দিতে চায় সেই ব্যবস্থাও করা হবে বলে আদালত জানিয়েছেন।
গত ৪ জুলাই স্কুল ছাত্রী জিসা মনি (১৫) নিখোঁজ হয়। এক মাস পর ৬ আগস্ট একই থানায় স্কুলছাত্রীর বাবা অপহরণ মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বন্দর উপজেলার বুরুন্ডি খলিলনগর এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে আব্দুল্লাহ (২২) ও তার বন্ধু বুরুন্ডি পশ্চিমপাড়া এলাকার সামসুদ্দিনের ছেলে রকিবকে (১৯)। ওই দিনই তাদের গ্রেফতার করা হয়। একই ঘটনায় দুইদিন পর গ্রেফতার করা হয় বন্দরের একরামপুর ইস্পাহানি এলাকার বাসিন্দা নৌকার মাঝি খলিলকে (৩৬)।
গত ৯ আগস্ট পুলিশ জানায়, স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার কথা স্বীকার করে আসামিরা ওইদিন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তবে ২৩ আগস্ট দুপুরে বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জ রেললাইন এলাকায় জীবিত অবস্থায় ফিরে আসেন নিখোঁজ স্কুল ছাত্রী জিসা মনি।
তিনি তার পরিবারকে জানিয়েছেন, বাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর ইকবাল নামের এক যুবককে তিনি বিয়ে করেছেন। পরে তার কথিত স্বামী ইকবালকে পুলিশ গ্রেফতার করে সেই অপহরণ মামলায় আসামি হিসেবে যুক্ত করে।
এ ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে পুলিশের তদন্ত ও আদালতে দেয়া আসামিদের জবানবন্দি প্রদানের বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়।