বছর জুড়ে আলোচনায় সাখাওয়াত, সমালোচনায় মহানগর বিএনপি!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: চলতি বছরটা শুধু নারায়ণগঞ্জ কিংবা বাংলাদেশের জন্যেই না বরং সমগ্র বিশ্বের জন্যে একটি অভিশপ্ত বছর হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। মরন ভাইরাস করোনা ভাইরাসের আঘাতে লন্ডভন্ড পুরো মানব জাতি। নারায়ণগঞ্জেও করোনা আঘাত হেনেছে প্রথমদিকেই। এক সময় করোনার হট স্পট ছিলো নারায়ণগঞ্জ। আর তাই করোনায় অনেকটাই থমকে আছে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি নেতাদের গত এক বছরে খুব কম সময়ের জন্যেই রাজপথে খুঁজে পাওয়া গেছে। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান। করোনাকালীন সময়ে লক ডাউনে যখন সকল বিএনপি নেতাকর্মীরা, তখন চাল ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে ছুটে বেড়িয়েছেন তিনি। এছাড়াও দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতিও বাড়িয়ে দিয়েছেন সহযোগিতার হাত। রাজনৈতিক কর্মকান্ডেও সারা বছরই আলোচনায় ছিলেন বিএনপির দূর্দিনের কান্ডারি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান।

এদিকে এ সময়ের মধ্যে একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। করোনার লকডাউনের সময় থেকেই নিজেকে লকডাউন করে ফেলেন মহানগর বিএনপির সভাপতি এড. আবুল কালাম। অসহায় সাধারণ মানুষতো দুরের কথা, দলীয় নেতাকর্মীরাই কোথাও খুঁজে পাননি তাকে। আর সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালতো সুময় খারাপ বুঝে উড়াল দেন সুদুর আমেরিকায়। এখ নপর্যন্ত সেখানেই আয়েশে দিন কাটাচ্ছেন তিনি।

করোনার লকডাউন চলাকালে মহানগর বিএনপির দুস্থ্য নেতাকর্মীদের মাঝে বিতরণের জন্যে আড়াইহাজার বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম আজাদ ১ লাখ টাকা দেন এটিএম কামাল আর আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে। সেই টাকা নিয়ে কেলেংকারীর সৃষ্টি হয় নেতাকর্মীদের মাঝে। কাশাল-টিপু সেই টাকা নেতাকর্মীদের না দিয়ে নিজেরাই কয়েকজনে মিলে ভাগ বাটোয়ারা করে খেয়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ জানায় বঞ্চিত তৃণমূল।

এছাড়াও বছর জুড়েই একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্ম দিয়েছেন মহানগর বিএনপির নেতারা। সংগঠনের বিতর্কিত সহ সভাপতি আতাউর রহমান মুকুলকে বিএনপিতে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন সহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা। এবারের মহান বিজয় দিবসে মহানগর বিএনপির ব্যানারে ফুল দিতে দেখা গেছে বিতর্কিত নেতা আতাউর রহমান মুকুলকে। সংগঠনের সহ সভাপতি পদ থাকলেও তিনি কখনো বিএনপির কর্মসূচি পালন করতেন না। বরং সরকারী দলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এমপি মন্ত্রীদের সাথেই তার সময় কাটতো। সরকারী দলের দলের একটি অনুষ্ঠানে তিনি মঞ্চে বসা অবস্থায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে কুকুর বলে গালি দিলেও তিনি তা বেমালুম হজম করে যান, কোন প্রতিবাদ করেননি। তাছাড়া সরকারী দলের নেতাকর্মীদের সাথে ফুলের নৌকা হাতে তার ছবিও বেশ বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলো। সর্বশেষ গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুল সরাসরি দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নেন এবং বিএনপির এজেন্টদের মেরে কেন্দ্র থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই বিতর্কিত নেতা মুকুলকে মহানগর বিএনপির ব্যানারে ফুল দিতে দেখে তাই ক্ষোভ প্রকাশ করতে গেছে নেতাকর্মীদের। তাছাড়া বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ হারানোর পর থেকে বিএনপিতে ঘেঁষতে শুরু করেছেন এই সুবিধাবাদী নেতা। ইতিমধ্যেই তার পোষ্টারে পোষ্টারে ছেয়ে গেছে নারায়ণগঞ্জ শহর। আর এসব কিছুকেই ভালো চোখে দেখছেন না নেতাকর্মীরা বরং কোনো অশুভ ইঙ্গিতই বলে ধারনা তাদের। আর এভাবেই বছর জুড়ে সমালোচনা সৃষ্টি করে গেছেন মহানগর বিএনপি নেতারা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ