না:গঞ্জে যানজট নির্মূল হয়, মাদক নির্মূল হয়না!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: যানজটের নগরী হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ শহর এখন অনেকটা যানজট মুক্ত। ‘অপারেশন ক্লিন স্ট্রিট’ নামে পুলিশের বিশেষ অভিযানে চাষাড়া চত্বরের যানজট অনেকটা নিযন্ত্রণে রয়েছে। চাষাড়া চত্বর যানজন মুক্ত করার মধ্যদিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, পুলিশ চাইলেই নগরবাসীর স্বস্তির ব্যবস্থা করতে পারেন। শহর যানজট মুক্ত করার মধ্যদিয়ে নগরবাসীর মনে প্রশ্ন জেগেছে, শহর যানজট মুক্ত করতে পারলেও কেন নারায়ণগঞ্জকে মাদক মুক্ত করতে পারছে না পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ জুড়ে এখন মাদকে সয়লাব। মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশেরও তেমন অভিযান না দেখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। তাদের মতে, পুলিশ চাইলে যানজটের মতো মাদক নির্মূল করাও সম্ভব।

এব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম নারায়ণগঞ্জ মেইলকে জানান, পুলিশের একার পক্ষে কিছুই সম্ভব না। যানজট নিযন্ত্রনে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মহোদয় ও সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান মহোদয়ের সহযোগীতা করেছেন। তাদের সাথে জেলা পুলিশের সম্বনয়ের কারণে শহর যানজট মুক্ত হয়েছে। মাদক নির্মূলেও রাজনীতিক, জনপ্রতিনিধি, সচেতন মহল, সাংবাদিকসহ সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। যানজট হয় একটি নির্দিষ্ট জায়গায় আর মাদক জেলার অলিগতিতে। তাই রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিদের সাতে পুলিশের সমন্বয়ে মধ্য দিয়ে যানজটের মত নারায়ণগঞ্জকেও মাদক মুক্ত করা সম্ভব।

সূত্র বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জ মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে। জেলার কোনো থানা এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান তেমন একটা দেখা যায়না। বিগত সময়ে মাদকের বিরুদ্ধে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হলেও বর্তমানে মাদক উদ্ধারে তাদের তেমন কোন তৎপরতা দেখা যায় না।

মাঝে মধ্যে সড়কে বা এলাকায় টহল পুলিশ সন্দেহজনক ব্যাক্তির ব্যাগ বা যানবাহন তল্লাসী করে মাদক আটক করলেও গত কয়েক মাস যাবৎ মাদক উদ্ধারে জেলা পুলিশ ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। বর্তমানে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মাদক নির্মূলে তেমন কোনো ধরনের অভিযান এলাকায় পরিচালনা করা হয় না। তাছাড়া জেলায় পুলিশী চেকপোষ্টগুলো তেমন সচল না থাকায় বিপুল পরিমান মাদক এ জেলায় অনায়াসে কোনো বাঁধা ছাড়াই প্রবেশ করছে। তবে মাদকের আখঁড়া হিসেবে পরিচিত চাঁনমারি বস্তি উচ্ছেদ করে প্রশংসিত হয়েছিল জেলা পুলিশ।

এই বস্তি উচ্ছেদ করার ব্যাপারে এর আগে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এতে নারায়ণগঞ্জ সদর অঞ্চলের মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছে। তবে চাঁনমারি বস্তি ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় আরো যে মাদকের আস্তানা বা মাদক বিক্রেতা রয়েছে তাদের গ্রেফতারে জেলা পুলিশ ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন বলে মনে করেন অনেকে। নারায়ণগঞ্জে আগে যে পরিমান মাদক উদ্ধার বা মাদক বিক্রেতা গ্রেফতার হতো বর্তমান সময়ে তা আর হতে দেখা যায় না। এর মানে এই নয়যে জেলায় মাদক বিক্রি বা সেবন কমে গেছে। তবে মাদক নির্মূলে পুলিশ সুপারের বক্তব্যের একাত্মতা প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল। তাদের মতে, পুলিশের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

এদিকে, মাদকের বিরুদ্ধে বিগত দিনে জিহাদ ঘোষনা করেছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। কিন্তু মাদক নির্মূলে তাকে কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। বরং তার কতিপয় অনুসারিদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের শেল্টার দেযার অভিযোগ রয়েছেন। এমনকি তার ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত বক্তবলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শওকত আলীর পুত্র মাদকসহ র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলো। তাই মাদক নির্মূলে জনপ্রতিনিধিদের নিজ পরিবার থেকেই উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন সচেতন মহল।

মাদক বিরোধী অভিযান কেন বন্ধ রয়েছে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) তরিকুল ইসলাম জানান, ঈদকে সামনে রেখে আগামী দুই একদিনের মধ্যে মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু হবে। আমি নতুন জয়েন করেছি,আগে কি অভিযান হয়েছিল তা আমার জানা নেই। তবে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি নারায়ণগঞ্জে মাদক নির্মূলে আমাদের তৎপরতা বাড়ানো হবে।

অপরদিকে, ‘অপারেশন ক্লিন স্ট্রিট’ নামে পুলিশের বিশেষ অভিযানের বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা পুলিশ (ট্রাফিক) জায়েদ পারভেজ জানান, ‘অপারেশন ক্লিন স্ট্রিট’ ঈদুল ফিতর পর্যন্ত চলবে। প্রয়োজনে ঈদের পরও তা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করা হবে।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ